
ইস্টার্ন টাইমস , কলকাতা : শুভেন্দু অধিকারীকে তীব্র আক্রমণ করলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেনের একটি চিঠিকে সামনে এনে কার্যত ঘুষখোর-তোলাবাজ বলে তীব্র আক্রমণ নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ককে।
শুধু তাই নয়, এতটাই আক্রমণাত্বক হয়ে ওঠেন অভিষেক বক্তব্যের মাঝে একেবারে তুই-তুকারী বলে আক্রমণ করতে থাকেন তিনি। রবিবার কূলতলিতে সভা করতে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেই সভামঞ্চ থেকেই একেবারে নাম ধরে শুভেন্দুকে আক্রমণ। বলেছেন, ‘তোমাকে টিভিতে টাকা নিতে দেখা গেছে। আর তুমি আমাকে তোলাবাজ বলছ? এই প্রসঙ্গে সুদীপ্ত সেনের আদালতে দেওয়া একটি চিঠিকে সামনে আনেন ডায়মন্ডহারবারের এই সাংসদ। সেই চিঠি ধরে অভিষেক বলতে থাকেন যে, এই চিঠিতে স্পষ্ট বলা রয়েছে যে তিনি শুভেন্দুকে টাকা দিয়েছেন।
শুভেন্দু অধিকারীকে ৬ কোটি টাকা দিয়েছিলেন! তাহলে তোলাবাজ-ঘুষখোর কে? সভা থেকেই জনতার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন অভিষেক!
তিনি আরও বলেন, ১০ বছর খেয়ে মধু, তোলাবাজ এখন সাজছে সাধু। সুদীপ্ত সেন আদালতকে চিঠিতে লিখেছিলেন। এমন প্রমাণ আমার বিরুদ্ধে নেই। সুদীপ্ত সেনকে ব্ল্যাকমেল করতেন শুভেন্দু অধিকারী।
এমনকি, আদালতে দেওয়া সুদীপ্ত সেনের চিঠিতে আরও লেখা আছে যে, পালানোর আগে সুদীপ্ত সেনের অফিসে যান শুভেন্দু। আর সেখানে গিয়েও শেষ মুহূর্তেও শুভেন্দু অধিকারী টাকা নিয়েছে বলে বিস্ফোরক দাবি অভিষেকের।সাংসদ বলেন, আমি প্রমাণ দিয়েছি, আমার বিরুদ্ধে প্রমাণ দিতে পারবে?
প্রমাণ দিতে পারলে ফাঁসির মঞ্চে মৃত্যুবরণ করব। টিভির পর্দায় টাকা নিয়েছ, আর ভাইপো তোলাবাজ?’
যদিও এহেন অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই বলেই দাবি বিজেপির। বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ওই চিঠি নিজে হাতে তৈরি করা। এর কোনও মূল্য নেই। সুদীপ্ত সেনের বয়ান তুলে কাউকে অভিযোগ করাটা হাস্যকর বলে মনে করেন তিনি। শুধু তাই নয়, ভোটের আগে এহেন চিঠির কোনও মূল্য নেই বলেই মনে করেন তিনি। অভিষেক আরও বলেন, ‘দিলীপ ঘোষ গুণ্ডা, কৈলাস বিজয়বর্গীয় বহিরাগত। ঘুষখোর শুভেন্দু অধিকারী, নাম করে বলছি।
অভিষেক বলেন, “পরিবারতন্ত্র নিয়ে আমাকে আক্রমণ করছে। এ দিকে এক পরিবারের সাতজন সদস্যের পাঁচজন রাজনীতি করে।” এর পরেই নাম করে অভিষেক বলেন, “মুকুল রায় নিজে বিজেপির সহসভাপতি আর ছেলে বীজপুরের বিধায়ক। আমাকে পরিবারতন্ত্র নিয়ে আক্রমণ করছে।
কৈলাস বিজয়বর্গীয় বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক, ছেলে আকাশ বিজয়বর্গীয় মধ্যপ্রদেশ থেকে বিধায়ক হয়েছেন। রাজনাথ সিংহ, দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী, ছেলে পঙ্কজ সিংহ উত্তরপ্রদেশ থেকে বিধায়ক হয়েছেন।
আমাকে পরিবারতন্ত্র নিয়ে আক্রমণ করেছে। শুভেন্দু অধিকারী, নিজে বিধায়ক মন্ত্রী ছিল। বাবা ও ভাই সাংসদ। আরেক ভাই মিউনিসিপ্যালটির চেয়ারম্যান, আর একজন কাউন্সিলর।
আর আমাকে পরিবারতন্ত্র নিয়ে আক্রমণ করছে। আমার পরিবারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া কেউ রাজনীতি করবেন না। করলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব। যারা বলছে, তারা এই গ্যারান্টি দিতে পারবে?”
অন্যদিকে, কুলতলির জনসভায় বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বক্তৃতার শুরুতেই তিনি স্লোগান তুললেন, ‘যতই নাড়ো কলকাঠি, নবান্নে আবার হাওয়াই চটি।’ অভিষেক বলেন, ‘এই জেলায় পরিবর্তনের প্রথম চাকা ঘুরেছিল। কুলতলিতে তৃণমূল প্রার্থীই জিতবেন। পঞ্চাশ হাজারের বেশি ভোটে জিতবেন।’
