ইস্টার্ন টাইমস, বিশেষ সংবাদদাতা , ঢাকা,১৭ অক্টোবর: করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে বাংলাদেশে এবার ১,১৭৫ টি মন্ডপে দুর্গাপুজো হচ্ছে না। তারপরেও প্রতিবেশি দেশে ৩০,২২৩ টি মন্ডপে উদযাপিত হবে দুর্গোৎসব। গত বছর দুর্গাপুজোর সংখ্যা ছিল ৩১ হাজার ৩৯৮টি।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত এ তথ্য জানান।
তিনি দুর্গাপূজার নানাদিক নিয়ে শনিবার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে এক আলোচনা ও মতবিনিময় সভায় জানান, করোনার কারণে রাজধানী ঢাকায় কোনো মন্ডপে এবার কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হবে না।
তিনি বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে এবছর ঢাকায় কোনো মন্ডপে কুমারী পূজা উদযাপন করা হবে না। তবে ঢাকার বাইরে কয়েকটি জায়গায় কুমারী পূজা হতেও পারে।’
সংক্রমণ এড়াতে এবছর বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এবছর দুই-একটি জায়গা ছাড়া প্রতিমা ভাঙার কোনো খবর পাওয়া যায়নি’।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জী বলেন, ‘করোনা অতিমারীর কারণে এবার উৎসব সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো পরিহার করে সাত্ত্বিক পূজায় সীমাবদ্ধ রাখতে হবে, এবারের দুর্গোৎসবকে ‘দুর্গাপূজা’ হিসেবে অভিহিত করছি।’
স্বাস্থ্যবিধি মেনে কীভাবে এবার পূজা করতে হবে, সে বিষয়ে গত ২৬ অগাস্ট পূজা উদযাপন পরিষদ ২৬ দফা দিক-নির্দেশনা দেয়। পরে ৪ অক্টোবর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে পূজাকেন্দ্রিক সভার সিদ্ধান্তের আলোকে অতিরিক্ত ৭ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনা মেনে এবারের পূজায় থাকবেনা পূজার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আয়োজন। অঞ্জলি দানের সময় ফেইসবুক লাইভের সহযোগিতা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নির্মল বাবু বলেন, ‘যেসব জায়গায় সরাসরি অঞ্জলি হবে, সেখানে ২৫ থেকে ৫০ জনের বেশি আসতে পারবেন না। সন্ধ্যা আরতির পর রাত ৯টার মধ্যে অবশ্যই পূজা মন্ডপবন্ধের নির্দেশনা দিয়েছি।’
দুর্গা পূজায় আগেই প্রসাদ বিতরণ ও বিজয়া দশমীর শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করেছিলো বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ।
নির্মল চ্যাটার্জি বলেন, ‘সপ্তমী তিথিতে বিশ্ববাসীর করোনামুক্ত হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে করা হবে প্রার্থনা। জনসমাগমের কারনে স্বাস্থ্যবিধি যাতে ভঙ্গ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’
পূজা উদযাপন পরিষদের ২৬ দফা নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মহালয়ার আয়োজন এবার হবে সীমিত আকারে, প্রতিটি কাজে মেনে চলতে হবে স্বাস্থ্য বিধি। ভক্তিমূলক সংগীত ছাড়া অন্য কোনো গান যেন বাজানো না হয়, মাইক বা পিএ সেট যেন ব্যবহার করা না হয়, পূজোমন্ডপে ‘প্রয়োজনের অতিরিক্ত দীর্ঘ সময়’ কোনো দর্শনার্থী যেন না থাকে এবং সন্ধ্যার বিরতির পর দর্শনার্থীদের প্রবেশে যেন নিরুৎসাহিত করা হয়- সেসব বিষয়ও আছে নির্দেশনায়।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের দেওয়া নির্দেশনায় এবার ভোগের প্রসাদ ব্যতিত ম-প কিংবা মন্দির কর্তৃপক্ষকে খিচুড়ি বা এজাতীয় প্রসাদ বিতরণেও মানা করা হয়েছে।
২৬ অক্টোবর বিজয়া দশমীর দিন শোভাযাত্রা পরিহার করে প্রতিমা বিসর্জনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ডপ বা মন্দির কর্তৃপক্ষ স্ব-উদ্যোগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিমা বিসর্জনের ব্যবস্থা নেবেন।
