
ইস্টার্ন টাইমস ,নয়াদিল্লি : ভারত সরকারের ৩ টি নতুন কৃষি আইনে স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।নতুন কৃষি আইনের বৈধতা খতিয়ে দেখতে চার সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করেছে শীর্ষ আদালত।ওই কমিটি রিপোর্ট আদালতের কাছে জমা দেবার পরেই সুপ্রিম কোর্ট চূড়ান্ত রায় দেবে।যতদিন পর্যন্ত না পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, ততদিন আইন তিনটি কার্যকর করা যাবে না।
সুপ্রিম কোর্টের গঠন করা কমিটিতে আছেন , ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের সর্বভারতীয় সভাপতি ভূপিন্দর সিং মান ,ড. কৃষি অর্থনীতিবিদ প্রমোদ কুমার যোশী ,অশোক গুলাটি , শেতকারী সগঠনের সভাপতি অনিল ঘনবত।
উল্লেখ্য, সোমবার রাতেই আন্দোলনরত কৃষক সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইন নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়ে বলেছিলো সম্পূর্ণভাবে ওই আইন প্রত্যাহার করতে হবে সরকারকে।
তাদের দাবি, কোনওরকম সংশোধন নয়, কোনও কমিটির সঙ্গে কথা নয়, সম্পূর্ণ ভাবে আইন প্রত্যাহার করতে হবে সরকারকে।
তাঁদের আইনজীবী আদালতে তা জানালে প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে, এএস বোপান্না এবং ভি রামসুব্রহ্মণ্যমের ডিভিশন বেঞ্চ বলে, ‘‘এটা রাজনীতি নয়। রাজনীতি এবং বিচার ব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। এ ক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা কাম্য।’’
মঙ্গলবার স্থগিতাদেশ ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট বলে ,‘‘আইন ৩টির বৈধতা নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন আমরা। একই সঙ্গে একটানা আন্দোলনের জেরে মানুষের জীবনযাত্রা এবং সম্পত্তির উপর যে প্রভাব পড়েছে, তা-ও যথেষ্ট উদ্বেগজনক। যতটা সম্ভব সুষ্ঠ ভাবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি আমরা। ক্ষমতা প্রয়োগ করে আইন স্থগিত রাখতে পারি আমরা।
কিন্তু অনির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত আইন স্থগিত রাখা যায় না। কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত একটি বিচারবিভাগীয় প্রক্রিয়া, এর ফলে বিষয়টি সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যাবে। আপনারা যদি অনির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যেতে চান, যান। আমরা নিজেদের জন্য এই কমিটি গঠন করছি। যাঁরা সত্যি সত্যি সমাধান চান, তাঁরা এই কমিটির কাছে যাবেন।
ওই কমিটি কোনও সিদ্ধান্তও নেবে না, কোনও শাস্তিও দেবে না। গোটা বিষয়টি নিয়ে ওই কমিটি শুধু আমাদের রিপোর্ট দেবে।’’ এদিন শুনানি শুরু হবার আদালত জানিয়ে দেয়, ‘এর সঙ্গে জীবন ও মৃত্যু জড়িয়ে।
আইন তিনটি নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন আমরা। একটানা আন্দোলনের জেরে মানুষের জীবনযাত্রা এবং সম্পত্তির উপরও প্রভাব পড়েছে। যতটা ভালভাবে সম্ভব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি আমরা।’
পাশাপাশি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে কৃষকদের আন্দোলন থামানোর জন্য সবরকম চেষ্টা করবে সু্প্রিম কোর্ট। উভয়পক্ষের মধ্যে জট কেন কাটছে না, তা বোঝারও চেষ্টা করেছে আদালত।
পাশাপাশি কৃষকরা যাতে রাস্তা আটকে বিক্ষোভ না করে রামলীলা ময়দানে তাঁদের আন্দোলন চালানোর জন্য দিল্লির পুলিশ কমিশনারের কাছে অনুমতি চান তার পরামর্শও দেন প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে।
তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে প্রায় দু’মাস ধরে দিল্লি সীমানায় অবস্থান বিক্ষোভ করছেন কৃষকরা। দাবি না মেটা পর্যন্ত তা চলবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে কৃষক সংগঠনগুলোর তরফে।কিন্তু কৃষকরা কোনও কমিটির সঙ্গে কথা বলতে প্রস্তুত নন বলে আদালতে জানান তাঁদের হয়ে সওয়াল করতে আসা আইনজীবী এমএল শর্মা।
তিনি যুক্তি দেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একবারও তাঁদের সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন দেখাননি। তাই কোনও কমিটির সঙ্গে বসতে রাজি নন আন্দোলনকারীরা। কিন্তু প্রধানবিচারপতি বলেন, ‘‘এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে কিছু প্রশ্ন করা যাবে না কারণ এই মামলায় কোনও পক্ষ নন তিনি।’’
