
ইস্টার্ন টাইমস , নয়া দিল্লি: কাশ্মীরে অনুচ্ছেদ ৩৭০ বিলোপের পর প্রথম নির্বাচনেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কাশ্মীর নীতির বিরুদ্ধে রায় দিলো জম্মু কাশ্মীরের মানুষ। মঙ্গলবার জেলা উন্নয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোটগণনায় সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজ্যে ফারুক আবদুল্লা -মেহবুবা মুফতিদের সাত দলের গুপকার জোট জিতেছে অথবা এগিয়ে আছে ১১৫ টি আসনে ।
অন্যদিকে, কেন্দ্রের সমর্থিত জম্মু-কাশ্মীর আপনি পার্টি (জেকেএপি) দাগ কাটতে ব্যর্থ হয়েছে । তাদের ঝুলিতে মাত্র ১৩ টি আসন। বিজেপি জিতেছে বা এগিয়ে আছে ৭০টি আসনে।কংগ্রেস ২৩ এবং নির্দলদের ৫৩টি আসনে জয়লাভের সম্ভাবনা আছে।নির্দলদের বড় অংশটাই গুপকার জোট সমর্থিত। অর্থাৎ , অনুচ্ছেদ ৩৭০ হঠানোর পর গেরুয়া শিবির খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি উপত্যকায়।বিজেপি প্রার্থীরা মূলত জিতছেন জম্মুতে।এখানে তাঁরা ৪৪টি আসনে এগিয়ে।
কাশ্মীর উপত্যকায় অল্প কিছু আসনে বিজেপি এগিয়ে। যেমন শ্রীনগর। ১৪টি আসনের মধ্যে নির্দল এগিয়ে সাতটি আসনে।
তিনটিতে জেকেএপি, গুপকর তিনটিতে এবং একটিতে বিজেপি এগিয়ে। বরং বিরোধীদের বিভিন্ন মামলায় আটক করে, ঘরবন্দি করে রেখে, প্রচারে পুলিশি বাধা দিয়েও নিজেদের পাল হাওয়া টানতে ব্যর্থ বিজেপি।
কার্যত মিনি বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের ট্রেন্ড যা বলছে তাতে কপালে চিন্তার ভাঁজ আরও গভীর হচ্ছে বিজেপি নেতাদের।উল্লেখ্য , রাজ্যের ২০টি জেলার ২৮০ টি আসনের জন্য ২৫ দিন ধরে ৮ দফায় ভোটগ্রহণ হয়েছে।
বিজেপির আধিপত্য রয়েছে জম্মু অঞ্চলে। সেখানে ১০৮টি আসনের মধ্যে ৬৫টিতে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি।
ন্যাশনাল কনফারেন্স ২০টি এবং কংগ্রেস ১৩টি ও নির্দলরা ১৪টিতে এগিয়ে রয়েছে। হিন্দু অধ্যুষিত জম্মুতে কিছুটা মান রক্ষা হওয়ার পথে বিজেপির। উল্লেখ্য, হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গিগোষ্ঠী এবং পুলিশকর্তা দাভিন্দপর সিংয়ের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে এনআইএ-র হাতে ধৃত পিডিপি যুবনেতা ওয়াহিদ পারা পুলওয়ামা আসনে বিপুল ব্যবধানে জয়লাভ করেছেন ।
গত বছর অগস্টে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে কেন্দ্রীয় সরকার। উপত্যকাকে দ্বিখণ্ডিত করে জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ, দু’টি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠিত হয়।
সেই নিয়ে থমথমে পরিবেশের মধ্যেই এই প্রথম নির্বাচন সম্পন্ন হল সেখানে। তাতে একদিকে রয়েছে আবদুল্লাদের ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি), মেহবুবা মুফতির নেতৃত্বাধীন পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি)-র মতো আঞ্চলিক দলগুলিকে নিয়ে গঠিত গুপকার জোট।
গুপকার ষোষণাপত্রের মূল কথা জম্মু-কাশ্মীরে পুনরায় ৩৭০ ধারা ফিরিয়ে আনা ,৫ আগস্ট ,২০১৯’র পূর্বাবস্থায় রাজ্যের মানুষের যে সাংবিধানিক অধিকার ছিল তা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।
কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একজোটে প্রতিবাদ জানাতে এবং উপত্যকার হৃত মর্যাদা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যেই গুপকার জোট গঠিত হয়েছিল।
তাই উপত্যকার মানুষের মনোভাব বুঝতে এই নির্বাচন তাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
একই সঙ্গে আগামী দিনে উপত্যকায় সরকার গড়তে হলে উপত্যকার মানুষের স্পন্দন বুঝতে মরিয়া ছিল গেরুয়া শিবিরও।কিন্তু এদিন ভোটগণনা যত এগিয়েছে ,ততই হতাশ হয়েছেন বিজেপির কাশ্মীর রূপকাররা।
