
অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়
সি এ বির নতুন টি টোয়েন্টি চ্যাম্পিয়ন দল তপন মেমরিয়াল। কিন্তু অনেকেই তপন মেমোরিয়াল ক্লাবের সঙ্গে পরিচিত নন । কলকাতার ক্রিকেটে ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, কালীঘাটের ভিড়ে এই সব নাম অপরিচিত । তবুও একটি টুর্নামেন্টের প্রথম চ্যাম্পিয়নকে কখনও ভোলা যায় না ।
প্রথম আই পি এলে অখ্যাত কালো ঘোড়া রাজস্থান রয়্যালস যেমন বড় দল চেন্নাই সুপার কিংস কে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাসে জায়গা করে নেয়, ঠিক তেমনই তপন মেমোরিয়াল মোহনবাগানের মত ফেভারিট দল কে হারিয়ে সি এ বির প্রথম টি-২০ টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়ন হয়ে কলকাতার ক্রিকেট ইতিহাসে জায়গা করে নিলো।
সেই দলের কোচ তথা অন্যতম কর্তা পার্থ চৌধুরী বলছিলেন,’খুব খুশি আমাদের ছেলেরা ভালো ক্রিকেট খেলল এই টুর্নামেন্টে। ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান কে লিগে হারিয়ে আবার মোহনবাগানকে ফাইনালে হারানোটা কম কথা নয়। ওরা টুর্নামেন্ট টা জিতে খুব খুশি। আমরা অল রাউন্ডার নির্ভর টিম করেছিলাম যে জিনিসটা টি টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে খুব দরকার।
কেউ ব্যাটিং , না হলে বোলিং বা ফিলডিং করে পুষিয়ে দিয়েছে । ওদের নিয়ে আমি খুব খুশি । শাহবাজ আর কাইফের অসাধারণ খেলা অন্যদের ছাপিয়ে গেছে।.এই দলকে নিয়ে আমি স্বপ্ন দেখছি। আশা করছি আসন্ন মুস্তাক আলি ও রঞ্জিতে আমাদের দল থেকে শাহবাজ কে ছেড়ে দিতে হবে , কারণ ওকে ছাড়া তো বাংলা দল হবে না । বাংলা দলে আমাদের ক্লাব থেকে অন্তত তিন জন খেলবে।’
তপন মেমোরিয়ালের ইতিহাস সম্পর্কে তিনি যা তথ্য দিলেন সেটা ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের থেকে ঐতিহ কিছু কম নয় ।
তার কথায়,’আমরা যেহেতু ইস্টবেঙ্গল বা মোহনবাগানের মত জনপ্রিয় নই , তাই অনেকে জানে না তবে আমাদের গৌরব কিন্তু কম নয়। আমার বাবা সমীর কুমার চৌধুরী ক্লাবের ফাউন্ডার মেম্বার আর প্লেয়িং মেম্বার ছিলেন ।
এছাড়া পান্না কাকা, নরেন কাকা আরও অনেকে ছিলেন সবাই হয়তো খেলতো না কিন্তু সবাই দারুন উৎসাহী ছিলেন ক্লাবটা তৈরীর ব্যাপারে।১৯৪২ সালে ক্লাবটা তৈরী হয়। তখন তো পাড়ায় পাড়ায় হৃদতা ছিল প্রতিবেশী দের মধ্যে। ১৯৪০ সালে পাড়ায় একটা বাচ্চা ছেলে মারা যায় তার নাম ছিল তপন । কলেজ স্ট্রিটের দিকে একটা টুর্নামেন্টে খেলতে যাবার সময় বাচ্চাটার স্মরণে ক্লাবের নাম দেওয়া হয় ‘তপন মেমোরিয়াল’।
আমাদের হোম গ্রাউন্ড ছিল পার্ক সার্কাস । এরপর ১৯৫৬ সালে ক্লাবটা ময়দানে চলে যায় । তখন বড় ক্লাবকে হারালে সি এ বি মান্যতা দিত ।
আমার বাবা ইনসুইং করতেন ভালো । বিখ্যাত অস্ট্রেলিয়ার পেস বোলার লিন্ড ওয়াল বলা হতো বাবাকে । ১৯৬৯সালে প্রথম ডিভিশনে পৌঁছে যায় তপন মেমোরিয়াল। ১৯৮১ তে দ্বিতীয় ডিভিশনে নেমে গিয়ে আবার পরের বছরেই প্রথম ডিভিশনে ফেরে ক্লাব।
গত ৩৮ বছর আমরা প্রথম ডিভিশনেই আছি।২০০৫ ও ২০১৫ সালে নক আউট রানার্স, ২০১৮-তে লিগ রানার্স আর এবারে টি-২০ চ্যাম্পিয়ন । আশা করি নতুন প্রজন্ম এই ধারা বয়ে নিয়ে যাবে.’
