
ইস্টার্ন টাইমস, আগরতলা: বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপি দলের নেতা – কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে, বিলাসবহুল হোটেলে ডেকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রয়োজনে দেশের আইন সংশোধন করে বহাল রাখা হবে চাকুরীতে। ভোটে জিতে বেমালুম ভুলে গেছেন প্রতিশ্রুতির কথা।
২০২০ সালের মার্চে চাকুরি হারিয়ে ত্রিপুরার ১০৩২৩ শিক্ষক – শিক্ষিকারা এখন রাজপথে। রাজধানী আগরতলার প্যারাডাইস চৌমুহনীতে চাকুরির স্হায়ী সমাধানের দাবিতে ৭ ডিসেম্বর থেকে ৩৪ দিন ধরে দিনরাত এক করে বসে আছেন চাকুরীচ্যুত শিক্ষক – শিক্ষিকারা।
কোন হেলদোল নেই হীরা সরকারের। এই কনকনে ঠান্ডায় ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের নিয়ে বসে থাকা শিক্ষক – শিক্ষিকাদের ডেকে একবারও কথা বলার প্রয়োজন বোধ মনে করেননি সরকারের মন্ত্রী,অফিসাররা।
গন – অবস্থান মঞ্চে বসে ৩ সহকর্মীর মৃত্যু সংবাদ পেলেন চাকুরীচ্যুত শিক্ষক – শিক্ষিকারা। দীর্ঘ অসুস্থতার পর গনেশ দেবনাথের মৃত্যুর পর ২ জানুয়ারী সকালে অভাবের তাড়নায় আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছিলেন দক্ষিণ ত্রিপুরার রাজনগরের মনাইপাথরের কমলাকান্ত পাড়ার চাকুরীচ্যুত শিক্ষক উত্তম ত্রিপুরা।
শনিবার বিকেলে খোয়াই জেলার আমপুরার নক্ষত্র পাড়ার আরেক চাকুরীচ্যুত বিষয় শিক্ষিকা রিমি দেববর্মা নিজের ৪ বয়সী শিশুকে অ্যসিড খাইয়ে নিজেও অ্যাসিড খেয়ে আত্মহত্যা করেন।
আশন্কাজনক অবস্থায় মা ও ছেলেকে আগরতলায় নিয়ে আসা হলে আগরতলার একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয় মেধাবী রিমির।
হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে ছোট্ট ছেলেটি। ত্রিপুরার পিছিয়ে পড়া উপজাতি ঘরের মেয়ে রিমি শিক্ষাবিজ্ঞানে এম এ তে টপার ছিলেন। পেয়েছিলেন স্বর্নপদকও।
স্বামী দীনেশ দেববর্মাও চাকুরীচ্যুত স্নাতক শিক্ষক। একই দিনে চাকুরী হারিয়েছেন দু – জনই। রিমির মৃত্যুর খবর শুনে তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়েন চাকুরীচ্যুত শিক্ষক – শিক্ষিকারা।
চাকুরীচ্যুত হওয়ার আদেশ বের হওয়ার পর এই নিয়ে মোট ৭৯ জন শিক্ষক – শিক্ষিকাকে হারালেন তারা। ১০৩২৩ যৌথ সংগ্রাম কমিটির নেতা কমল দেব সরকারকে তীব্র হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, এইভাবে ধৃতরাষ্ট্রের মত বসে থাকবেন। আগুন নিয়ে খেলবেন না। দ্রুত তাদের বিষয়টি স্হায়ী সমাধানের উদ্যোগ নিতে ফের জোরালো দাবি জানান সরকারের কাছে।
