
আন্দোলন ভাঙতে ত্রিমুখী কৌশল সরকারের
ইস্টার্ন টাইমস , নয়াদিল্লি: কৃষকদের ভুল বুঝিয়ে লাভ নেই, তাঁদের সঠিক পথে নিয়ে আসব, মঙ্গলবার গুজরাতের কচ্ছে এক অনুষ্ঠান থেকে বিরোধীদের এ ভাবেই আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।তিন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে কৃষকদের আন্দোলনের ২০তম দিন ছিল মঙ্গলবার । এমন পরিস্থিতিতে এদিন গুজরাতে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এদিন কচ্ছ জেলায় একাধিক প্রকল্পের শিলান্যাসে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার সময় কৃষকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় অংশ নেন মোদী।কৃষকদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, “কৃষকদের বলা হয়েছে নতুন কৃষি আইন বাস্তবায়িত হলে তাদের জমি অন্যরা দখল করবে। আমি আপনাকে জিজ্ঞাসা করতে চাই, আপনি দুধ বিক্রি করছেন বলে কী ডেয়ারি মালিকরা আপনার গরু নিয়ে নেবে ?
সরকার সর্বদা কৃষক কল্যাণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আমরা কৃষকদের আশ্বাস এবং তাদের উদ্বেগের সমাধান করব।”
গুজরাতে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে এটা পরিষ্কার সরকার কৃষক সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনার দরজা খোলা রাখার কথা বললেও , তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবি মানবে না কিছুতেই। শীর্ষস্থানীয় সূত্রের ভাষ্য অনুযায়ী , সরকার কৃষক আন্দোলন ভাঙতে ত্রিমুখী কৌশল নিয়েছে। এক , বিজেপি প্রভাবিত রাজ্যগুলির কিছু কৃষক সংগঠনকে চলতি আন্দোলনের বিরুদ্ধে দাঁড় করানো।
ইতিমধ্যেই হরিয়ানা ,মধ্যপ্রদেশের কিছু কৃষক সংগঠন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর-এর সঙ্গে দেখা করে তিনটি কৃষি আইনকে সমর্থন জানিয়েছেন।
দুই ,প্রতিদিন নিয়ম করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ,বিজেপি নেতাদের দিয়ে কৃষক আন্দোলনকে জনসমক্ষে হেয় প্রতিপন্ন করা।কৃষক আন্দোলন মাওবাদী , বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত বলে ইতিমধ্যেই তোপ দেগেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ ,পীযুষ গোয়েলরা।
তিন , বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নিজ নিজ রাজ্যে কৃষক আন্দোলন যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে সেদিকে বিশেষ নজর দিতে।
গুজরাতে বিরোধীদের তোপ দেগে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন , “বিরোধীরা ক্ষমতায় থাকাকালীন তারা এই কৃষিক্ষেত্র সংস্কারের পক্ষে ছিলেন।
বিরোধীরা কৃষকদের বিভ্রান্ত করছে, তাঁদের কাঁধে হাত রেখে গুলি চালাচ্ছে। তারা এই সংস্কারগুলিও চেয়েছিল কিন্তু তারা ক্ষমতায় থাকাকালীন পারেনি। তবে এখন আমরা এটি করতে পেরেছি, তারা কৃষকদের বিভ্রান্ত করছে। আমি পুনরাবৃত্তি করতে চাই যে আমার সরকার আপনার সমস্ত সন্দেহের সমাধানের জন্য ২৪ ঘন্টা প্রস্তুত।”
কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে এখনও অনড় কৃষকরা। দিল্লি সীমানায় কৃষকদের বিক্ষোভ ২০ দিনে পড়ল। সোমবার ৩২টি কৃষক ইউনিয়নের প্রধানরা অনশনে বসেছেন।
এর আগে, একাধিকবার সরকারের সঙ্গে কৃষকরা আলোচনার টেবিলে বসলেও জট কাটেনি। কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে গত সপ্তাহে ভারত বনধও পালন করেন কৃষকরা।
মোদীর অভিযোগ, ‘‘কৃষি আইন নিয়ে কৃষকদের অনবরত ভুল বুঝিয়ে যাচ্ছে বিরোধীরা। তাঁদের উস্কাচ্ছেন।’’ এর পরই তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘এ কাজ করে কোনও লাভ হবে না। কৃষকদের এই আইন নিয়ে বোঝানোর চেষ্টা চালিয়ে যাবে সরকার।’’
