
ইস্টার্ন টাইমস , কলকাতা: মন্ত্রিত্ব ও তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়লেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা। রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। শুভেন্দু অধিকারীর পর রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে আরও এক মন্ত্রীর ইস্তফা৷ এবার মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন প্রাক্তন বাংলা ক্রিকেটের অধিনায়ক লক্ষ্মীরতন শুক্লা৷ ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি।
জানা যাচ্ছে তা গৃহীতও হয়েছে৷ হাওড়ায় দলের জেলা সভাপতি পদও ছেড়েছেন লক্ষ্মী৷মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় জানিয়েছেন ,” তিনি (লক্ষ্মীরতন শুক্ল) লিখেছেন, ‘আমি খেলার প্রয়োজনে রাজনীতি থেকে দূরে সরে যেতে চাই।’ তাই তাঁকে অব্যাহতি দিতে পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করার জন্য রাজ্যপালকে সুপারিশ করা হয়েছে।”
পদত্যাগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া , ” ও ভাল ছেলে। ইস্তফা দিয়েছে ঠিক আছে। কিন্তু এর মধ্যে কোনও ভুল বোঝাবুঝি নেই। খেলাধুলা ছাড়া লক্ষ্মীর ইস্তফাতে ভিন্ন কোনও কারণ নেই। “
তবে লক্ষ্মীরতন শুক্লা এখনই অন্য দলে যাচ্ছেন কি না, তা স্পষ্ট নয়৷ প্রাক্তন ক্রিকেটারের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, আপাতত রাজনীতি থেকে অবসর নিতে চান লক্ষ্মী৷ কিছু দিন তিনি বিশ্রাম নিতে চান৷ তার পরই নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানাবেন তিনি৷মুখ্যমন্ত্রীকে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে লক্ষ্মীরতন জানিয়েছেন যে তিনি রাজনীতি ছেড়ে আপাতত ক্রিকেটে মন দিতে চান।
তাই মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে চাইছেন না। তবে বিধানসভার বাকি দিনগুলো বিধায়ক পদে থেকেই কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন লক্ষ্মীরতন।
লক্ষ্মীরতনের চিঠির বয়ান দেখে তাঁর ইস্তফাপত্র গৃহীত হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর।
২০১৬ সালে রাজ্যের ক্ষমতায় দ্বিতীয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার আসার পর ক্রীড়াদপ্তরের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান হাওড়া উত্তরের বিধায়ক লক্ষ্মীরতন শুক্লা।
দক্ষতার সঙ্গেই সেই কাজ চালাচ্ছিলেন প্রাক্তন ক্রিকেটার। পুজোর আগে সংগঠনে রদবদলের সময়ে তাঁকে হাওড়ার জেলা সভাপতির দায়িত্বও দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কিন্তু বিধানসভা ভোটের আগে ঘাসফুল শিবিরে ক্রমশ ভাঙ্গন চওড়া হচ্ছে। সেই আবহেই লক্ষ্মীরতনের পদত্যাগ যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী।
হাওড়া টাউনের তৃণমূল চেয়ারম্যান অরূপ রায় জানিয়েছেন, ভোটের আগে লক্ষ্মীরতনের সরে যাওয়া হাওড়ার সংগঠনে খানিকটা প্রভাব পড়বে বলেই মনে করছেন অরূপ রায়।
লক্ষ্মীরতন শুক্লার পদত্যাগ নিয়ে এই মুহূর্তে যথেষ্ট সরগরম বঙ্গের রাজনৈতিক মহল। এ নিয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘ওদের দলে তো ভাঙন শুরুই হয়েছে।
আমাদের উপর হামলা করতে গিয়ে নিজেদের লোকজনকেই হারাচ্ছে।’ বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া, ‘মুখ্যমন্ত্রীর এবার বোঝা উচিত যে ওর সহকর্মীরাই ওর উপর আর ভরসা রাখছেন না।’
উল্লেখ্য, বেশ কিছু দিন ধরেই তিনি দলীয় কর্মসূচি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন লক্ষ্মী৷ ২০১৬ সালে শাসক দলে যোগ দিয়েছিলেন তিনি৷ তৃণমূলের অন্দরের খবর, রাজবী বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতোই লক্ষ্মীরতন শুক্লার সঙ্গেও হাওড়া জেলার চেয়ারম্যান এবং মন্ত্রী অরূপ রায়ের দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছিল৷ ফলে কাজের ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছিল৷ যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অরূপ রায়৷
