
Jadavpur University
ইস্টার্ন টাইমস ,কলকাতা ,৩ অক্টবর : ছাত্রদের আচরণে অপমানিত হয়ে পদত্যাগ করলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ডিন কল্যান কুমার দাস। ভর্তি কমিটির বৈঠকেই তিনি পদত্যাগ করেন। যদিও স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের ফাইনাল পরীক্ষা চলায় এবং স্নাতকের ভর্তি প্রক্রিয়া শুরুর মুখে, তাই কল্যাণ বাবুর পদত্যাগ গ্রহণ করেননি উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। তিনি ডিনকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা আর্জি জানিয়েছেন।
সম্প্রতি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সংসদের পাঠানো ই’মেলে -যে ভাষায় ডিন কল্যান কুমার দাস’কে আক্রমণ করা হয়েছে, তাতেই তিনি অপমানিত হয়ে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কল্যান বাবু নিজেই।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার উপাচার্য সুরঞ্জন দাস’কে পাঠানো ওই ই-মেলে ছাত্র সংসদের পক্ষ থেকে লেখা হয়, ‘ফ্যাকাল্টি কাউন্সিল, এবং সিদ্ধান্তগ্রহণকারী সব ভার্চুয়াল বৈঠকের লিঙ্ক তাদের পাঠাতে হবে, সব বৈঠকে সংসদকে স্মারকলিপি দেওয়ার সুযোগ দিতে হবে, কী সিদ্ধান্ত হল সেটাও ছাত্র সংসদের যে আইডি আছে সেখানে ই-মেল করে জানাতে হবে এবং প্রয়োজনে ডিনকে তাঁদের ফোন ধরত হবে। ডিন ফোন না ধরলে তাঁরা সরাসরি উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলবেন।’
পাশাপাশি, যেখানে রেজাল্ট তৈরি হচ্ছে সেখানে ছাত্র সংসদের এক পদাধিকারীর বিরুদ্ধে বসে থাকার অভিযোগও উঠেছে। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে তৈরি হয়েছে অসন্তোষ। ভর্তি কমিটির বৈঠকে প্রতিটি বিভাগের প্রধানরা এর নিন্দা করেন। অধ্যাপক সহ বাকি শিক্ষকদের বক্তব্য, যে ভাষায় ই-মেলটি করা হয়েছে তা অত্যন্ত অপমানকর। এটিকে ছাত্র সুলভ কাজ বলা যায় না। আর এই বৈঠকগুলিতে যাঁরা সদস্য তাঁরাই থাকেন। ছাত্রদের থাকার কথা নয়।
শিক্ষক সমিতি জুটা’র সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় জানিয়েছেন, ‘করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও শুধুমাত্র ছাত্রদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে শিক্ষকরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। সেখানে এই ধরনের অপমানকর ই-মেইল বার্তা শিক্ষকদের কাছে অত্যন্ত অপমানজনক।’ অতীতে বহু ঘটনাতেই শিক্ষকরা ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ছাত্রদের তরফ থেকেও শিক্ষকদের প্রতি আচরণ মর্যাদাপূর্ণ হওয়া উচিত বলেও অনেকেই মন্তব্য করেছেন।
অন্যদিকে নিজেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্র সংসদের তরফে জ্যোতির্ময় বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা কাউকে ব্যক্তিগতভাবে কিছু বলিনি। সাধারণ সময়ে কোনও বৈঠক হলে আমরা জানতে পারতাম। কিন্তু এখন ভার্চুয়ালি সব বৈঠক হওয়ায় ছাত্র সংসদ কিছুই জানতে পারছে না। আমরা বৈঠকে থাকতে চেয়ে কোনও ই-মেল করিনি। ই-মেলের ভাষায় কেউ অপমানিত বা আঘাত পেয়ে থাকলে আমরা দুঃখিত।’
উপাচার্য সুরঞ্জন দাস জানিয়েছেন,ন ‘যাদবপুরে একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশ আছে। এখানে পড়ুয়া সহ সব শ্রেণীর কথা শোনা হয়। সেখানে কোনও শিক্ষকের প্রতি অমর্যাদাকর ব্যবহার অত্যন্ত নিন্দনীয়। এহেন আচরণ যাদবপুরের ঐতিহ্যের পরিপন্থী। আমি ডিনের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করছি না।’
