বিশেষ প্রতিনিধি ,ঢাকা ,৩ অক্টবর : ‘বঙ্গোসাগর’ নামে ভারত ও বাংলাদেশ মধ্যকার তৃতীয় নৌমহড়া শুরু করছে। দু’দেশের দুটির রণতরীর সমন্বিত টহলের পর উত্তর বঙ্গোপসাগরে এই মহড়া হচ্ছে শনিবার থেকে ।
মহড়ায় ভারত তাদের সাবমেরিনবিধ্বংসী করভেট আইএনইএস কিলতান, নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র করভেট আইএনএস খুকরি ও সমুদ্র টহল বিমান ও হেলিকপ্টার মোতায়েন করবে। আর বাংলাদেশ নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র ফ্রিগেট বিএনএস আবু বকর ও নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র করভেট বিএনএস প্রত্যয় মোতায়েন করবে।
বাংলাদেশের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর-আইএসপিআর জানিয়েছে, তৃতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হওয়া এই যৌথ টহল ও মহড়া শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত চলবে। যৌথ এ টহল ও মহড়ায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর দুটি যুদ্ধজাহাজ বানৌজা প্রত্যয়, বানৌজা আবু বকর ও ১টি এমপিএ অংশগ্রহণ করছে।
সমুদ্র এলাকায় অবৈধভাবে মৎস্য আহরণ, চোরাচালান, মানবপাচার, জলদস্যুতা এবং মাদক পাচারসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড নিরসনের লক্ষ্যে এ যৌথ টহল ও মহড়া পরিচালিত হবে। দু’দেশের এই যৌথ টহল ও মহড়া বঙ্গোপসাগরে নিজ নিজ জলসীমায় সমুদ্র বিষয়ক অপরাধ সম্পর্কিত তথ্য আদান-প্রদান, তথ্যাদির সঠিক ব্যবস্থাপনা, সমুদ্রপথে অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনাকারী জাহাজসমূহ চিহ্নিতকরণ ও বিভিন্ন অপরাধ নিরসনকল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এছাড়া যৌথ এ টহল ও মহড়ার সফল বাস্তবায়ন সমুদ্র পথে অপরাধমূলক কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি আঞ্চলিক সমুদ্র নিরাপত্তা রক্ষা, সমুদ্র নিরাপত্তার ঝুঁকি মোকাবেলা ও সমুদ্র অর্থনীতির উন্নয়নে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে আশা করা হচ্ছে।
ভারতীয় নৌবাহিনীর মুখপাত্র কমান্ডার বিবেক মাধওয়াল বলেন, এই মহড়ার লক্ষ্য হচ্ছে মহড়ার মাধ্যমে পারস্পরিক নির্ভরশীলতা বাড়ানো। মহড়ার মধ্যে থাকবে সার্ফেস ওয়্যারফেয়ার ড্রিল, সিম্যানশিপ ইভালুয়েশন ও হেলিকপ্টার অপারেশন।
তিনি বলেন, এরপর দুই দেশের রণতরীগুলো আন্তর্জাতিক জলসীমার মধ্যে যৌথভাবে টহল দেবে। তিনি বলেন, এ ধরনের মহড়ার ফলে দুই দেশের নৌবাহিনীর মধ্যে সমঝোতা বাড়াবে, টহলে সমন্বয় জোরদার করবে।
ভারত অব্যাহতভাবে বাংলাদেশের সাথে সামরিক সম্পর্ক জোরদার করছে। বাংলাদেশ কয়েক বছর আগে চিনের কাছ থেকে প্রথমবারের মতো ডিজেল-চালিত সাবমেরিন সংগ্রহ করেছে। আর শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, শিলেশলস ও মৌরিতানিয়া, মায়ানমার, নেপাল ও বাংলাদেশের প্রতিবেশীদের চিনা উপস্থিতি থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করছে ভারত।
সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার জন্যই বাংলাদেশে করোনা নিয়ন্ত্রণে আছে: শেখ হাসিনা
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রকসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থা অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে সমন্বিতভাবে কাজ করায় করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে বলে শনিবার জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘কিছু মানুষ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বা স্বাস্থ্য মন্ত্রক নিয়ে অনেক কথা বলছে আমি জরুরি ভিত্তিতে তাদের যে নির্দেশনাই দিয়েছি তারা তা করেছে। তারা সঠিকভাবে কাজ করেছে…এ কারণেই আমরা করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি।’
শেখ হাসিনা জানান, করোনাভাইরাস সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে তিনি যখন কোনো নির্দেশনা দিয়েছেন তখন তাদের সরকারি নিয়মের বাধ্যবাধকতা এড়িয়ে দ্রুত কাজ করতে বলেছেন। কারণ দেশের মানুষকে চিকিৎসাসেবা দেয়ার জন্য সেগুলো খুব জরুরি ছিল।
‘আমাদের কাজ করতে হবে, আমাদের বিভিন্ন উপকরণ সংগ্রহ করতে হবে, আমাদের জনগণকে চিকিৎ্সা দিতে হবে, আমাদের জনগণের কাছে যেতে হবে, এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। জরুরি বিষয়ে সব নিয়ম অনুসরণ করার দরকার নেই। কেউ যদি কারও জন্য কোনো সমস্যায় পড়েন, সেটা আমরা দেখব,’ বলেন তিনি।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে সরকার জরুরি ভিত্তিতে দুই হাজার চিকিৎসক ও তিন হাজার নার্সের পাশাপাশি কিছু টেকনিশিয়ান নিয়োগ দিয়েছে।
‘আমি অর্থ ও জনপ্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রককে একসাথে বসতে বলেছি। এসব চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ান নিয়োগে আমি সিদ্ধান্ত দিয়েছি এবং তাৎক্ষণিকভাবে কাগজে সাইন করেছি,’ বলেন তিনি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামি লিগের প্রধান শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দেশের আরও চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ান দরকার হওয়ায় সরকার এ বিষয়ে কিছু নীতি শিথিল করে।
তিনি জানান, মহামারির শুরুতে যত দ্রুত সম্ভব সরকার জেলা পর্যায় পর্যন্ত হাসপাতালগুলোকে অক্সিজেন সরবরাহ ও আইসিইউ ব্যবস্থাসহ প্রস্তুত করে তুলে।
তিনি জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে সহায়তার জন্য সব সরকারি সংস্থা এবং আওয়ামি লিগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোকে তাদের সমন্বিত আন্তরিক প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ জানান।
‘শুধুমাত্র আওয়ামি লিগের জন্যই জনগণ সহযোগিতা পেয়েছে, যদি অন্য কোনো দল (ক্ষমতায়) থাকত তবে অসংখ্য মানুষ মারা যেত, তারা অবর্ণনীয় দুর্ভোগের মধ্যে পড়ত,’ বলেন তিনি।
বিভিন্ন দেশে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সমস্যার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার তাদের দুর্ভোগ লাঘবে চেষ্টা করেছে, এমনকি তাদের ফিরিয়ে আনতে বিশেষ বিমান পাঠিয়েছে।
‘তারা এ মাটির সন্তান, আমরা তাদের মানুষ হিসেবে দেখি, আমাদের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের মাধ্যমে আমরা বিদেশে তাদের প্রণোদনা দিয়েছি,’ বলেন তিনি।
