
ইস্টার্ন , ঢাকা, ২৩ জানুয়ারি : ভারতের বিরুদ্ধে ভূ-রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারে অর্থনৈতিক সুবিধাসহ নানা সহযোগিতা করে বাংলাদেশকে কাছে পেতে চেষ্টা করছে চিন। অতিমারি করোনাকালেও বিভিন্ন সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করেছিল।
ঢাকার সঙ্গে ভ্যাকসিন কূটনীতিতেও প্রথমে এগিয়ে ছিল বেইজিং। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শেষ মূহুর্তে ভ্যাকসিন কূটনীতিতে বাজিমাত করেছেন।
বাংলাদেশকে ২০ লক্ষ কোভিশিল্ড উপহার পাঠিয়ে চিনকে হারিয়ে দিয়েছেন। আর ভারতের ভ্যাকসিন পেয়ে খুশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
সূত্রের খবর, চিনের ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠান সিনোফার্ম বায়োটেকের তৈরি করোনা ভ্যাকসিনের ১ লাখ ১০ হাজার ডোজ পাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের।
কিন্তু বাংলাদেশ ভ্যাকসিনটি তৈরিতে অর্থায়ন করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করায় সেই চুক্তি পূর্ণতা পায়নি। পরবর্তীতে ভারতের কাছে ভ্যাকসিনের জরুরি সরবরাহ চায় বাংলাদেশ সরকার।
বাংলাদেশের এক আধিকারিক বলেন, ভারত অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনটি প্রস্তুত করছে। আর এটাই সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়। ভ্যাকসিনটি স্বাভাবিক শীতল তাপমাত্রায় মজুদ ও পরিবহণ করা যাবে।
বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর বিদ্যমান ব্যবস্থার সঙ্গে এই টিকা সামঞ্জস্যপূর্ণ।
এদিকে ভারতের উপহার কোভিশিল্ড বাংলাদেশের পাঠানোর পরও থেমে নেই চিনের তৎপরতা। বাংলাদেশকে তারাও উপহার হিসেবে ভ্যাকসিন পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে।
বাংলাদেশে তৃতীয় ধাপের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ (ট্রায়াল) করতে যাচ্ছে আনুই জিফেই নামের একটি চিনা প্রতিষ্ঠান। ভ্যাকসিনের পরীক্ষার পাশাপাশি তারা যৌথ গবেষণা ও উৎপাদনের কারখানাও স্থাপন করতে চায়।
এসব বিষয়ে চূড়ান্ত আলোচনার জন্য প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট দু-এক দিনের মধ্যে ঢাকায় যাবেন বলে জানাগেছে।
বাংলাদেশে ভ্যাকসিনের পরীক্ষা করতে যাওয়া চিনা প্রতিষ্ঠানটি হলো আনুই জিফেই লংকম বায়োফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড।
বেইজিং থেকে গত মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানটির এক ঊর্ধ্বতন আধিকারিক জানান, ভ্যাকসিন পরীক্ষা সফলভাবে শেষ হওয়ার পর বাংলাদেশে যে ভ্যাকসিন উৎপাদিত হবে, তার একাংশ মুজিব বর্ষের উপহার হিসেবে পাবে বাংলাদেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী।
হাসিনা সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সিদ্ধান্তের পর চলতি মাসের শুরুতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) টিকা পরীক্ষার প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়ে আনুই জিফেইকে চিঠি দেয়।
বিএসএমএমইউর উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে আনুই জিফেইয়ের সঙ্গে গবেষণায় যুক্ত হওয়ার বিষয়ে সম্মতি জানিয়ে চিঠি দিয়েছি।
এখন তাদের প্রতিনিধিদল এসে কীভাবে কাজ করবে এ বিষয়টি বিস্তারিতভাবে ঠিক করবে। আগামী তিন-চার দিনের গবেষণা প্রটোকল (পরীক্ষাবিধি) চূড়ান্ত করা হবে বলে আশা করছি।’
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসে আনুই জিফেইয়ের প্রস্তাব নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে চিনের প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় প্রতিনিধিদের একাধিক আলোচনা হয়েছে। এরপর এ নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনার জন্য কোম্পানির প্রতিনিধিরা ঢাকায় আসছেন।
