ইস্টার্ন টাইমস ,আগরতলা: ত্রিপুরার তরুণী লোকশিল্পীর উপর যৌন নিগ্রহের ঘটনা ঘিরে বিক্ষোভে উত্তাল রাজ্য| বিশেষ করে পুলিশের পদ্ধতিগত ভুলের জন্য চারজন আসামিরই জামিন হয়ে যাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে| বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশের বাধা ঘিরেও প্রশ্ন উঠেছে| বর্তমান সরকারের প্রশাসনের ব্যর্থতার অভিযোগও উঠছে| কেননা বিভিন্ন ধরনের অপরাধ ইদানিং অনেকটাই বেড়ে গেছে বলে অভিযোগ|
দুর্গাপুজোর দশমীর রাতে আগরতলার অশ্বিনী মার্কেট এলাকায় নিগ্রহের শিকার হন ওই লোকসঙ্গীত শিল্পী| পৈশাচিক উল্লাসে অভিযুক্তরা ঘটনার ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়| যা থেকে নিন্দার ঝড় শুরু হয়ে যায়|
দুষ্কৃতকারীরা তরুনীর পোশাক ছিড়ে দিয়ে ক্যামেরার সামনেই যৌন আক্রমণ করে|
ত্রিপুরায় এরকম ঘটনা আর ঘটেনি, বলে এই ঘটনাটিকে অন্য কোনো রাজ্যের বলে মনে করতে থাকেন মানুষ| কিন্তু পরে প্রচার মাধ্যমে বিষয়টি উঠে এলে এবং সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় শুরু হলে মানুষের টনক নড়ে|
বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠনের পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে| ত্রিপুরা সংস্কৃতি সমন্বয় কেন্দ্রের পক্ষ থেকেও রাজধানী আগরতলায় এক বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়| প্রতিবাদ মিছিল করে ত্রিপুরা তপশিলি জাতি সমন্বয় সমিতি| দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠে শহর|
এই অবস্থায় ভিডিও ফুটেজ দেখে আমতলি থানার পুলিশ সঞ্জিত বর্মন, অসীম মজুমদার, অরিজিত বিশ্বাস ও উৎপল দে নামে চারজনকে গ্রেফতার করে| ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪(এ)(বি), ৩৪ নং ধারা এবং আই.টি. অ্যাক্টের ৬৭ নং ধারায় অভিযোগ এনে প্রথম শ্রেণীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াই. তানেজার কোর্টে পেশ করা হয়|
কিন্তু এ ধরনের মামলার ক্ষেত্রে আসামীদের গ্রেফতারের আগে ফৌজদারি কার্যবিধি প্রণালীর ৪১ নং ধারা অনুযায়ী যে নোটিশ দিতে হয়, সেটা পুলিশ দেয়নি| পুলিশের এই পদ্ধতিগত ত্রুটির জন্য অভিযুক্তরা জামিন পেয়ে গেছে| যা নিয়ে ফের বাড়ছে বিক্ষোভ| পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, এই মামলায় আরও প্রায় দশজন আসামী রয়েছে| কিন্তু বাকিদের গ্রেফতারের আগেই ধৃত চারজনের জামিন হয়ে যাওয়ায় এই ঘটনার সঠিক তদন্ত ও দুষ্কৃতকারীদের শাস্তি নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে|
