
ইস্টার্ন টাইমস, আগরতলা: স্বশাসিত জেলা পরিষদের (এডিসি) নির্বাচন এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ফের তাদের দাবি নিয়ে সক্রিয় হলো ত্রিপুরায় বিজেপির ছোট শরিক ইন্ডেজিনাস পিপলস ফ্রন্ট অফ ত্রিপুরা অর্থাৎ আই.পি.এফ.টি.| তাদের ডাকা চব্বিশ ঘণ্টার এডিসি এলাকা বনধে মিশ্র সাড়া দেখা গেছে বৃহস্পতিবার |
যদিও বন্ধ ছিল রেল পরিষেবা | রাজ্য সরকারের শরিক হয়েও স্বশাসিত জেলা পরিষদ বা এডিসি এলাকা নিয়ে পৃথক রাজ্য গড়ার দাবিতে এই বনধ ডাকায় নানা ধরনের প্রশ্নও উসকে দিয়েছে | কেননা জোটের প্রধান শরিক এই দাবি মানছে না |
এডিসি এলাকায় নির্বাচন আসছে | তাই ফের পৃথক রাজ্যের দাবি জোরদার হয়ে উঠেছে | ২০০৯ সাল থেকে আইপিএফটি এডিসি এলাকা নিয়ে পৃথক রাজ্যের দাবি করে আসছে | এই এলাকা আয়তনের দিকে ত্রিপুরার তিনভাগের দুই ভাগ, আর জনসংখ্যা বারো লক্ষের মতো| যাদের নব্বই শতাংশই হচ্ছেন উপজাতি|
গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে আই.পি.এফ.টি.’র জোট হয়| সেই জোটের শরিক হিসেবে আইপিএফটি পৃথক রাজ্যের দাবি জোরদার করে| জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রাখে কয়েকদিন| পরে দলের নেতারা দিল্লিতে গিয়েও দেখা করেন| কিন্তু এই অবরোধ আর আন্দোলন বিধানসভা নির্বাচনে কিছুটা হলেও অনুঘটকের কাজ করে|
নির্বাচনে জয়ী হয় বিজেপির জোট| কিন্তু নির্বাচন শেষ হওয়ার পরেই এই দাবি অনেকটা হিমঘরে চলে যায়| আইপিএফটি’র নেতাদের সঙ্গে কর্মী সাধারণের তাতে দ্বিমত শুরু হয়| এই আড়াই বছরে পৃথক রাজ্যের দাবি নিয়ে তেমন কিছুই হয় না |
কিন্তু পাহাড়ে ফের নির্বাচনের দামামা বেজে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পৃথক রাজ্যের দাবিকে হিমঘর থেকে বের করে নিয়ে এসে আবার ঝাঁপিয়ে পড়েছে আইপিএফটি| কর্মীদের একটা অংশ অবশ্য এনিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন তুলছেন| দাবি নিয়ে নির্বাচনের আগেই সরব হওয়ার পেছনের উদ্দেশ্য নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন তারা|
পৃথক রাজ্যের এই দাবি সিপিআই(এম) আর কংগ্রেস তো বটেই আইপিএফটি’র শরিক বিজেপি পর্যন্ত মানে না| কারণ রাজ্যের ভৌগলিক অবস্থান, বিশেষ করে এডিসি এলাকার অবস্থান এমনই যে, একে আর আলাদা রাজ্য করার কোনো সুযোগ নেই| বিশেষজ্ঞরা অন্তত এমনটাই বলছেন |
তার পরেও পৃথক রাজ্যের দাবিতে বৃহস্পতিবার বনধ ডেকেছিল আইপিএফটি| যে বনধে অনেকটাই মিশ্র সাড়া দেখা গিয়েছে| উত্তর ত্রিপুরা জেলার কাঞ্চনপুর সহ অপেক্ষাকৃত কম প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে দোকানপাট বেশিরভাগই খোলা ছিল| তবে ট্রেন চলেনি| অফিস কর্মীরা কোথাও যান নি| অপেক্ষাকৃত প্রত্যন্ত এলাকার সবকিছুই ছিল সম্পূর্ণ বন্ধ |
এদিকে এই পৃথক রাজ্যের দাবি নিয়ে আইপিএফটি’র সাধারণ সম্পাদক বনমন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়ার নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপি সভাপতি জে.পি. নাড্ডা’র সঙ্গে সাক্ষাত করার জন্য দিল্লি গেছেন| গত বিধানসভা নির্বাচনের সময়েও কেন্দ্রীয় সরকার এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মডালিটি কমিটি গঠনের কথা বলেছিল| কিন্তু এসব নিয়ে নির্বাচনের পরে আর তেমন কিছু হয়নি |
ষাট সদস্যক ত্রিপুরা বিধানসভায় গত নির্বাচনে আই.পি.এফ.টি. বিজেপির শরিক হিসেবে আটটি আসন পেয়েছিল| বিপ্লবকুমার দেবের মন্ত্রীসভায় আই.পি.এফ.টি’র দু’জন মন্ত্রী আছেন |
