
বনদফতরের লোক নিয়োগ নিয়ে ওনার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে : পার্থ
স্টার্ন টাইমস , কলকাতা : শুক্রবার রাজভবনে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের কাছে পদত্যাগের চিঠি দিয়ে বেরিয়ে আসার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন সদ্য প্রাক্তন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান ‘অনেক ক্ষোভ ও বেদনা নিয়ে মন্ত্রিত্ব ছাড়লাম। আড়াই বছর আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’
যখন সেচমন্ত্রী ছিলেন এবং সেচ দপ্তর থেকে হঠাৎই তাকে বদলি করে দেওয়া হয় অন্য দপ্তরে এবং সেই সময় তিনি উত্তরবঙ্গে সেচ দপ্তরের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সেই সময তিনি টিভির পর্দায় দেখতে পান তাকে অন্য দপ্তরে বদলি করে দেওয়া হয়েছে। তখনই ভীষণভাবে ব্যথিত হন তিনি।
সংবাদমাধ্যমকে এদিন সেই কথা জানান তিনি এবং বলতে-বলতে আবেগ তারাত হয়ে পড়েন তিনি। এবং জানান তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেবেন এবং দলের এক কর্মী হযে শুধুমাত্র কাজ করবেন।
পাশাপাশি তিনি জানান তাকে অন্য দপ্তরে দেওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাকেই সৌজন্যবোধের একটা ফোন পর্যন্ত করেননি ।
এর পাশাপাশি তিনি জানান তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কৃতজ্ঞ এমনকি তিনি তাদের সঙ্গে কাজ করেছেন সমস্ত সতীর্থদের কাছে তিনি অনেক বেশি সাহায্য পেয়েছেন । কারও বিরুদ্ধে তার কোনো ব্যক্তিগত আক্রমণ নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন। যখন তিনি যে দপ্তরে ছিলেন সেখানে পূর্ণতা সঙ্গে এবং দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছেন বলেও এদিন তিনি আরো একবার জানিয়েছেন।
তিনি সব সময় চেয়েছেন মানুষের উন্নয়নে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে একদম তৃণমূল স্তরে গিয়েই কাজ করতে এবং আগামী দিনে তাই করবেন বলেও এদিন তিনি জানিয়েছেন।
পাশাপাশি তিনি জানান আগামী দিনে তিনি কোন রাজনৈতিক দলে থাকুন বা না থাকুন মানুষের জন্য তিনি সবসময় ব্রতী হবেন। মানুষের পাশে তিনি থাকবেন বলেও জানিয়েছেন ।
তবে সর্বশেষে তিনি বলতে বলতে আবেগ তাড়িত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি জানান এমন দিন তাকে দেখতে হবে তিনি ভাবতেও পারেননি। তার কাছে এই দিনটি সবথেকে বেদনাদায়ক দিন।
শুক্রবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে পদত্যাগী বনমন্ত্রী সম্পর্কে জানতে চাইলে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘বনদফতরের লোক নিয়োগ নিয়ে ওনার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। কাজ করার ইচ্ছে থাকলে এ দলে থেকে অনেক কাজ করা যেত।’
ডোমজুড়ের তৃণমূল বিধায়কের বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা উস্কে দিয়ে পার্থর খোঁচা, ‘যেখানে যাচ্ছেন বুঝবেন কতটা কাজ করা যায়।’ রাজীব সম্পর্কে তাঁর আরও মন্তব্য, দলছাড়ার একটা কারণ খোঁজা হচ্ছিল।
কাজ করতে পারছিলেন তো এতদিন কাজ করলেন কীভাবে?
সেই সঙ্গে তৃণমূলত্যাগী বিজেপি নেতাদের উদ্দেশে তৃণমূল মহাসচিবের কটাক্ষ, যাঁরা তৃণমূলকে আনুগত্য দেখাতে পারল না, অথচ ক্ষমতা ভোগ করল, তাঁরা এবার বিজেপিতে গিয়ে কী করবেন সেটাই প্রশ্ন।
রাজীব ব্যানার্জির মন্ত্রিত্ব ত্যাগ নিয়ে পার্থর আরও কটাক্ষ, বিজেপি এঁদের মুখগুলো ব্যবহার করতে চাইছে। এঁদের বিজেপিতে নেওয়া হচ্ছে যাতে তৃণমূলকে নিয়ে এঁরা বিরূপ মন্তব্য করেন।
বঙ্গ বিজেপিকে কটাক্ষ করে পার্থর মন্তব্য, তৃণমূলের যাঁদের সম্পর্কে অভিযোগ ছিল তাঁরাই এখন গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়েছেন। বিজেপির পুরনো কর্মীরা কোথায়? প্রশ্ন তৃণমূল মহাসচিবের।
তিনি যোগ করেন, বিজেপির সাংগঠনিক ক্ষমতা এমনই দুর্বল যে তাদের ভাড়া করা নেতাদের নিয়ে ভরাতে হচ্ছে। বাংলায় মমতার বিকল্প মুখ খুঁজতে গিয়ে পাঁচমেশালি দল তৈরি করছে বঙ্গ বিজেপি, বলেন পার্থ।
তৃণমূলত্যাগীদের নিয়ে তাঁর আরও মন্তব্য, বিরাট বটগাছের দুটো পাতা ঝরে পড়লে গাছের কোনও ক্ষতি হয় না। নতুন পাতা জন্ম নেয়। যাঁরা অভিযোগ করে তৃণমূলের ক্ষতি করার চেষ্টা করছিল তারা এখন বিজেপিতে।
শেষে রাজীব ব্যানার্জির মন্ত্রিত্ব ছাড়া নিয়ে পার্থবাবুর মন্তব্য, ‘এটা যে সঠিক সিদ্ধান্ত নয়, একদিন তাঁরা বুঝবেন। ভোটে মানুষই বিচার করবে এঁদের ভূমিকা।’
