অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা: ২০০৮ সালে দিয়েগো মারাদোনাকে প্রথম কলকাতা তথা ভারতে আনার অন্যতম কারিগর ছিলেন সি পি এম নেতা ও প্রাক্তন সাংসদ শমীক লাহিড়ী।মারাদোনার প্রয়ানের ২৪ঘন্টা পরেও মেনে নিতে পারছেন না দিয়েগোর চলে যাওয়াটা।বৃহস্পতিবার সকালে টেলিফোন আলাপচারিতায় শমীক বার বার চলে যাচ্ছিলেন সেই পুরোনো স্মৃতিতে।
তিনি বলেন , মারাদোনাকে যখন আমরা কলকাতায় নিয়ে আসি, তখন এই ভারতবর্ষে ফুটবলের জনপ্রিয়তা কমছিল। সেই কারণে আমরা কয়েকজন মিলে বিশ্বের কিংবদন্তি ফুটবলারদের নিয়ে এদেশে জনপ্রিয়তা ফিরিয়ে আনার প্রকল্প হাতে নিয়েছিলাম। সেই সূত্রেই মূলত আমি, ভাস্কর গোস্বামী, পাণ্ডেরা কাজ করেছিলাম। আমরা যোগাযোগ করি।
সেই সময় আমরা মারাদোনাকে বলি যে, ১০০ কোটির দেশকে বাইরে রেখে কি পৃথিবীর ফুটবল মানচিত্র তৈরি হতে পারে? উনি এই একটি কথাতেই ভীষণ প্রভাবিত হয়েছিলেন।
মারাদোনার বাড়িতে মাত্র পাঁচ মিনিটের জন্য দেখা করার অনুমতি মিলেছিল। উনি বলেছিলেন, “এতদূর থেকে যেহেতু তোমরা এসেছো, তাই পাঁচ মিনিট তোমাদের সঙ্গে কথা বলব। কিন্তু তার বেশি নয়।” তারপর ওঁর বাড়ি পৌঁছে যা হল, তাতে আমরা অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। প্রায় দু’ঘণ্টা উনি আমাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। নানা বিষয় নিয়ে সেদিন ওঁর বাড়িতে আমাদের কথা হয়েছিল।
ছোট্ট একটা ছিমছাম বাড়িতে তখন থাকতেন উনি। সুইমিং পুল, টেনিস কোর্ট, ওই পরিসরেও ছিল রাজকীয় আয়োজন। যেখানে উনি টিম মিটিং করেন, সেখানেই আমাদের বসালেন। আর আমরা পুরো বিষয়টা নিয়েই যেন বিস্ময়ের ঘোরে ছিলাম।
কিন্তু দেখা হওয়ার পর উনি এমন ভাবে আমাদের জড়িয়ে ধরলেন, তাতে বিস্ময় আরও বেড়ে গেল। স্বয়ং মারাদোনা আমাদের জড়িয়ে ধরেছেন। বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। মিনিট পাঁচেকের মধ্যে ভাষার দূরত্ব ঘুচে গেল। তৎক্ষণাৎ বলেছিলেন, ‘‘দাও, তোমাদের কন্ট্রাক্ট পেপার কোথায়? সই করতে হবে।’’ আমরা প্রস্তুতি নিয়ে যায়নি।
বললাম, দেশে ফিরে সব ব্যবস্থা করছি। যাই হোক, উনি এক কথায় রাজি হয়ে গিয়েছিলেন ভারতে আসতে।
এরপরে কলকাতা তে এলেন ভাবতেও পারেন নি এত লোক তাকে দেখার জন্য মাঝরাতে দাঁড়িয়ে থাকবে যাওয়ার সময় বলে গেল নেপোলির পর কলকাতাতে এত ভালোবাসা পেলাম. আমার মনে হলো ফুটবল ঈশ্বর কে নিয়ে আসা আমার সার্থক হল.এরপর পেলে এসেছিলেন কলকাতায়।সেই আবেগ কিন্তু দেখতে পাইনি, আসলে মারাদোনা হল ফুটবলের সমার্থক।’
