
ইস্টার্ন টাইমস ,নয়াদিল্লি: কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন তিনটি কৃষি আইন জারিতে স্থগিতাদেশ দিয়ে পর্যালোচনার জন্য কমিটি গঠন করেছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু সেই কমিটির চার সদস্যই কৃষি আইনের পক্ষে বলে দাবি তুলেছে কৃষক সংগঠনগুলি। কমিটির বৈঠকেও তাঁরা অংশ না নেওয়ার কথা সাফ জানিয়ে দিয়েছে।
এদিকে, বুধবার ৫০ দিনে পা রাখল কৃষক আন্দোলন।সুপ্রিম কোর্টের গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি আগামী ১০ দিনের মধ্যে শুনানি শুরু করবে বলে জানা গিয়েছে। প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ ওই প্যানেলকে দুমাস সময় দিয়েছে। দুমাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে সুপ্রিম কোর্টের কাছে।
সেই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে এই মামলার চূড়ান্ত রায় দেবে শীর্ষ আদালত।
এই কমিটির সদস্য কারা? ভারতীয় কিষান ইউনিয়ন এবং অল ইন্ডিয়া কিষান কোঅর্ডিনেশন কমিটির জাতীয় সভাপতি ভূপিন্দর সিং মান, কৃষি অর্থনীতিবিদ তথা ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট–এর ডিরেক্টর ড. প্রমোদ কুমার যোশি, কৃষি অর্থনীতিবিদ অশোক গুলাটি , শেতকারি সংগঠনের প্রধান অনিল ঘনওয়াত।ঘনওয়াত কৃষি আইনের সমর্থনে বহু প্রতিবেদন লিখেছেন।
গুলাতি ১৯৯৯ থেকে ২০০১ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ছিলেন। ডিসেম্বরে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে কৃষি আইনের সমর্থনে কথা বলেছিলেন।
বলেছিলেন, ‘কৃষকদের উৎপাদিত দ্রব্য বিক্রির জন্য আরও জায়গা দিতে হবে।
এজন্য নতুন আইন জরুরি।’ ঘনওয়াত যে শেতকারি সংগঠনের সদস্য, তারা কৃষি আইন পাস হওয়ার পর তা সমর্থন করে আনন্দ উৎসব করেছিল ।
তবে তিনি বলেছিলেন, এই আইন পাসের আগে কৃষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসা উচিত ছিল কেন্দ্রের। ডিসেম্বরে ভূপিন্দর সিং মান-এর নেতৃত্বে এক দল কৃষক কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমরের সঙ্গে দেখা করে জানিয়েছিলেন, তারা কৃষি আইনের পাশে রয়েছেন।তাই এই চার জনকে সুপ্রিম কোর্ট আলোচনা কমিটিতে নিয়োগ করার পরই ক্ষোভ প্রকাশ করেন আন্দোলনরত কৃষক সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের ঘোষণার পর যৌথ মঞ্চের অন্যতম নেতা যোগেন্দ্র যাদব বলেছেন ,’সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের মন্তব্য শুনে কৃষকরা যে আশার কিরণ দেখেছিলেন ,মঙ্গলবার আদালতের রায়ে তা পরিণত হয়েছে রেশম-এর ফাঁসে’।
তিনি সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন ,”বিজ্ঞান ভবনে দফায় দফায় বৈঠক করে সরকার যে সাফল্য অর্জন করতে পারেনি ,এবার সেটা করার চেষ্টা হচ্ছে বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে।
কমিটির চারজন সদস্যই তিনটি নতুন কৃষি আইনের ঘোর সমর্থক ও প্রচারক। স্বাভাবিকভাবেই কমিটির সঙ্গে আন্দোলনরত কৃষক সংগঠনগুলির কথা বলার প্রশ্নই ওঠেনা।” তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র টুইটারে লিখেছেন , ‘সুপ্রিম কোর্ট ৪ সদস্যের কমিটি গঠন করার পরই কৃষকদের ন্যয় পাওয়ার যাবতীয় বিভ্রান্তি ভেঙে গিয়েছে। ওই চার জনের রেকর্ড দেখুন।
এটা পক্ষপাতিত্ব নয়?’ মহুয়া আরও লেখেন, ‘আমার ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে যা বুঝলাম, ২ মাস অতিরিক্ত সময় পাওয়া গেল, যাতে কৃষকদের বাড়ি পাঠানো যায়, যাতে কোণঠাসা অবস্থা থেকে সরকারকে ফিরিয়ে আনা যায় এবং শেষমেষ কমিটির রিপোর্ট এগিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেবে।সরকার মনে করছে তত দিনে আন্দোলনের গতিই হারিয়ে যাবে’।
