বিশেষ প্রতিনিধি ,ঢাকা ,৪ অক্টোবর : আসন্ন দুর্গাপূজায় ম-প সংখ্যা যথাসম্ভব কমিয়ে সীমিত রাখতে হবে ও প্রতিমা বিসর্জনকালে কোনো শোভাযাত্রা করা যাবে না এবং অঞ্জলি দিতে ম-পে জনসমাগম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে রবিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. শরীফ মাহমুদ অপু স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
রবিবার দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সভাকক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে শারদীয় দুর্গাপুজো ২০২০ উপলক্ষে পূজা ম-পসমূহের নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও প্রাসঙ্গিক বিষয়ে আলোচনাক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে একটি ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, করোনার দ্বিতীয় ধাপ (সেকেন্ড ওয়েভ) সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। প্রতিমা বিসর্জনকালে কোনো শোভাযাত্রা করা যাবে না। মন্ডপে প্রবেশের সময় শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ করোনাভাইরাসের সব স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে। ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষা করে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করতে হবে।
আরও সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, পূজাম-পে জনসমাগম কমানোর জন্য অঞ্জলি দেয়া অনুষ্ঠান টিভি চ্যানেল-এ লাইভ প্রচারের জন্য পূজা উদযাপন কমিটি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। জনসমাগম সীমিতকরণসহ অন্যান্য নির্দেশনাবলী মিডিয়ায় প্রচারের ক্ষেত্রে তথ্য মন্ত্রক সহযোগিতা করবে।

এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মোবাইল ডিউটিতে থাকবে। পূজামন্ডপ ব্যবস্থাপনায় পূজা উদযাপন কমিটি স্থানীয় প্রশাসনের ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সমন্বয় করবেন। জরুরি প্রয়োজনে পূজা উদযাপন কমিটি ৯৯৯ সেবা নিতে পারবেন। দেশব্যাপী সার্বজনীন পুজো কমিটির নেতারা এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এর আগে আগস্টে বাংরাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ২৬ দফা নির্দেশনা পাঠিয়েছেন সারা দেশের পূজা উদ্যাপন পরিষদ, মন্দির ও পূজা কমিটির কাছে।
সেখানে বলা হয়, সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে অনুষ্ঠান শুধু ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসরণ করে পূজা-অর্চনার মাধ্যমে মন্দির প্রাঙ্গণেই সীমাবদ্ধ থাকবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ভক্তিমূলক সংগীত ছাড়া অন্য কোনো গান যেন বাজানো না হয়, মাইক বা পিএ সেট যেন ব্যবহার করা না হয়, পুজোমন্ডপে ‘প্রয়োজনের অতিরিক্ত দীর্ঘ সময়’ কোনো দর্শনার্থী যেন না থাকে এবং সন্ধ্যার বিরতির পর দর্শনার্থীদের প্রবেশে যেন নিরুৎসাহিত করা হয়- সেসব বিষয়ও আছে নির্দেশনায়।
সব ধরনের আলোকসজ্জা, সাজসজ্জা, মেলা, আরতি প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিহার করা, সম্ভব হলে বাসা/বাড়িতে থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভক্তদের অঞ্জলি দেওয়া, খোলা জায়গার অস্থায়ী প্যান্ডেলে স্বাস্থ্যবিধি পরিপূর্ণভাবে মেনে চলা, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে মন্ডপকেন্দ্রিক ‘শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি’ গঠন, গুজবে বিভ্রান্ত না হয়ে তাৎক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করা এবং প্রতিমা নিরঞ্জনে শোভাযাত্রা পরিহার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
