বিশেষ সংবাদদাতা ,ঢাকা ,৫ অক্টোবর : বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে অনেক ক্ষেত্রে ছাড় দিতে ভারত প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নব নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলো। এই সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে আমার আন্তরিক চেষ্টা থাকবে। নৌ, রেল ও সড়ক পথ উন্নয়ন এবং বাণিজ্য সম্প্রসারণের বিষয়টিও গুরুত্ব দেওয়া হবে।’
সোমবার আখাউড়া স্থলবন্দরে বাংলাদেশি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন বিক্রম দোরাইস্বামী।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ভারতের সবচেয়ে কাছের বন্ধুরাষ্ট্র। এই বন্ধুরাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অটুট ও আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাবো।’
এদিন বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনের দায়িত্ব গ্রহণ করতে যাওয়ার সময় আখাউড়া সীমান্তে তাকে স্বাগত জানান আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী আধিকারিক মো. নূর-এ-আলম, সহকারি কমিশনার ভূমি মো. মেজবাহ উল আলম ভূইয়া, সহকারী পুলিশ সুপার (কসবা সার্কেল) মিজানুর রহমান প্রমুখ। এছাড়া সেখানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাইকমিশনার অনিন্দ ব্যানার্জী ও দ্বিতীয় সচিব সুভাশীষ সিনহা।
সস্ত্রীক বাংলাদেশে যাওয়া ভারতীয় নতুন হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী স্থলবন্দরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার সৌভাগ্য এমন একটি দায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশে এসেছি। দুই দেশের অত্যন্ত উন্নত সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে চাই।’
তিনি মৃদু হেসে বলেন, ‘আমি বাংলা কিছুটা বুঝতে পারি। তবে বলতে পারি না। শিখতে চাই। সামনের দিনে আপনাদের সঙ্গে বাংলায় কথা বলার ইচ্ছে আছে।’
ভারতে চিকিৎসাসহ অন্যান্য জরুরি ভিসার প্রক্রিয়া দ্রুততার সঙ্গে করার কথা জানান ভারতীয় হাইকমিশনার। ভ্রমণ ভিসার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও এদেশের মানুষ আমাদের বন্ধু। যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য ভিসা ব্যবস্থা চালু করা আবশ্যক। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে ভিসা ব্যবস্থা এখনই চালু করা যায় কিনা তাও ভেবে দেখা হবে।’
বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার পর দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে আরও অন্য বিষয় নিয়ে কথা হবে বলেও জানান তিনি।

ধর্ষণের প্রতিবাদে উত্তাল বাংলাদেশ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ইস্তফা দাবি
বিশেষ সংবাদদাতা ,ঢাকা ,৫ অক্টোবর : বাংলাদেশের নোয়াখালীতে এক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত ধর্ষণের প্রতিবাদে ঢাকায় অবরোধসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও মানবশৃংখল করেছে বিভিন্ন সংগঠন। এসব প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ইস্তফা দাবি উঠেছে।
প্রতিবাদকারীদের মধ্যে রয়েছে বিক্ষুব্ধ সাংবাদিক সমাজ, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত নোয়াখালীর সুবর্ণচরের শিক্ষার্থীর, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টসহ বিভিন্ন প্রগতিশীল সংগঠন।
এসব সংগঠনের নেতাকর্মীদের ‘এই ধর্ষক রাষ্ট্র, এই ধর্ষক সরকার চাই না’, ‘যে সরকার ধর্ষক পালে, সেই সরকার চাই না’ স্লোগানে প্রকম্পিত হয় ঢাকা।
এসময় বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিনের বিচারহীনতায় নারী-শিশু ধর্ষণ, নির্যাতন ও শ্লীলতাহানির ঘটনা বেড়েই চলেছে। এসব ঘটনায় রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থাকা লোকজন জড়িত। নোয়াখালীর ঘটনা ৩২ দিন আগের। এতদিন রাষ্ট্র ও সরকার কী করেছে? এভাবে আর চলতে পারে না।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েত সাকী বলেন, যৌন নির্যাতনকারীদের সরকার পৃষ্ঠপোষকতায় করে। এতে অপরাধীরা আইনের আওতায় আসে না। দেশের প্রচলিত আইনে ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবতজ্জীবন জেল। সরকারের কাছে ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- করারও দাবি জানান তিনি।
সোমবার সকালে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিক্ষুব্ধ সাংবাদিক সমাজ মানবশৃংখল করে।
এছাড়া ঢাকার শাহবাগে ‘বন্দি সময়ের চিৎকার’ ব্যানারে অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নেয় ছাত্র ইউনিয়ন ও ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে শাহবাগ’ প্ল্যাটফর্মের নেতাকর্মীরা। শাহবাগ মোড় অবরোধ করে গণজমায়েত করায় সেখানকার সড়কে যান চলাচল দুপুর ১২টা-১টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে। পরে পুলিশের অনুরোধে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয় অবস্থানকারীরা। তাদের মুহুর মুহুর স্লোগাণে মুখরিত ছিলো পুরো এলাকা।
বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ছাত্রদল ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত নোয়াখালীর সুবর্ণচরের শিক্ষার্থীরা আলাদা ব্যানারে মানববন্ধন করে। অপরদিকে রাজধানীর উত্তরা ও নারায়ণগঞ্জে বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়েছে।
