
ইস্টার্ন টাইমস , কলকাতা: বৃহস্পতিবার ডায়মন্ডহারবারে যাওয়ার পথে বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা, দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, কৈলাশ বিজয়়বর্গীয়, অনুপম হাজরা, রাহুল সিনহা সহ অন্যান্য নেতৃত্তের গাড়ির উপরে অতর্কিতে ইট-পাথর লাঠি নিয়ে হামলা চালালো তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা।
বিজেপি নেতারা যাতে ডায়মন্ডহারবার পৌঁছাতে না পারে সে কারণে আমতলা থেকে শিরাকোল, রাস্তায় অবরোধ করে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল দফায় দফায় এদিন রাস্তায় জেপি নাড্ডার কনভয় আটকানোর চেষ্টা করে। শিরাকোল মোড় ছাড়তেই মুহূর্মুহূ ইটবৃষ্টি শুরু করে তৃণমূল কর্মীরা। জেপি নাড্ডার গাড়ি বুলেট প্রুফ হওয়ায় ইটের আঘাত থেকে রক্ষা পায়।
যদিও রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, কৈলাশ বিজয়়বর্গীয়, মুকুল রায় অনুপম হাজরা সহ একাধিক নেতার গাড়ির কাঁচ ইটের আঘাতে ভাঙ্গা হয়। এমনকি পুলিশের গাড়ির কাঁচও ভাঙ্গা হয়।
এদিন নাড্ডার যাত্রাপথে মিছিল শুরু করে তৃণমূল কংগ্রেস। মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন তৃণমূলনেতা সওকত মোল্লা।বিজেপির অভিযোগ মূলত তাঁর নেতৃত্বেই ইটবৃষ্টি শুরু করে তৃণমূল কর্মীরা।বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এদিন সকালেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে, ডায়মন্ড হারবারের পথে সম্ভবত রাস্তা অবরোধ, বিক্ষোভ প্রদর্শন করে নাড্ডার যাত্রাপথ আটকাতে চাইবে তৃণমূল।কিন্তু এইভাবে হামলা চালানো হবে তা তিনি ভাবতেও পারেননি।
এই হামলা প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্য়ায় বলেছেন, ‘‘জেপি নাড্ডা যখন গাড়ি করে যাচ্ছিলেন, তখন তাঁর গাড়ির ভিতর থেকে ভিডিও করে প্রোভোকেশন তৈরি করা হচ্ছিল।
এটা পরিকল্পনামাফিক করা হয়েছে। পাবলিসিটির জন্য এসব করেছে। রাজনীতির নাম করে শান্তিপ্রিয় পশ্চিম বাংলাকে অশান্ত করার চেষ্টা চলছে।
তৃণমূল কংগ্রেসকে বদনাম করার চেষ্টা চলছে। এই পরিকল্পনা সফল হবে না’।তিনি বলেছেন, ‘যদি কেউ অন্যায় করে থাকে, তা যদি তৃণমূল কংগ্রেসের দলের কেউ হয় আমরা খতিয়ে দেখব, শাস্তি হবে।
দলের কর্মীদের অনুরোধ করবো কেয়ারফুল থাকার জন্য, যাতে তাঁরা ফাঁদে না পা দেন। কর্মীদের অনুরোধ করব ওঁদের থেকে দূরত্ব রাখার। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে সরকারিভাবে। কেউ দোষী প্রমাণ হলে শাস্তি পাবে।আমি অবাক হব না যদি বিজেপির নেতারা এটা করে থাকেন। আমরা অনেক জায়গায় দেখেছি ওদের লোকেরা গিয়ে আমাদের নামে দোষ দেয়।’’
ঘটনার খবর পেয়েই টুইট করে তীব্র নিন্দা করেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। বিজেপি সভাপতির উপর হামলার ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলার অবস্থার পরিচয় দিচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরাই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। অপর দিকে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘গোটা রাস্তা পুলিশ দিয়ে নজরদারি চালানো সম্ভব নয়।
কিছু কিছু জায়গায় জনগণ বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।’ বিজেপির সর্বভারতীয় সহ–সভাপতি মুকুল রায় আবার বলেছেন, ‘বাংলায় জঙ্গলরাজ চলছে।’ বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা আবার দাবি করেছেন, ‘আক্রমণে মুকুল রায় ও কৈলাস বিজয়বর্গীয় আহত হয়েছেন। এটা গণতন্ত্রের পক্ষে লজ্জা। কনভয়ের সব গাড়িতেই আক্রমণ চালানো হয়েছে। বুলেটপ্রুফ গাড়িতে ছিলাম বলে বেঁচে গেছি।’
এরপর জনসভায় নাড্ডা বলেন, ‘এই গুন্ডারাজ বেশিদিন বরদাস্ত করা হবে না। জঙ্গলরাজ চলছে। প্রশাসন ভেঙে পড়েছে।’ কৈলাস বিজয়বর্গীয়র কথায়, ‘পুলিশের সামনেই এই আক্রমণ হয়েছে।’
যদিও রাজ্য পুলিশের তরফে টুইট করে জানানো হয়েছে , ‘‘নিরাপদেই সভায় যোগ দেন জে পি নাড্ডা। তাঁর কনভয়ে কিছুই হয়নি। কনভয়ের পিছনে কয়েকটি গাড়ি লক্ষ করে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ ইট-পাথর ছোড়েন। সকলেই সুরক্ষিত। পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ রয়েছে। আদতে ঠিক কী হয়েছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে’’।
এদিকে জেপি নাড্ডার কনভয় ছাড়াও ডায়মন্ড হারবারে বিজেপির জনসভার আগেই বিজেপি কর্মীদের ওপরও তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ।
হামলায় আহত হয়েছেন বিজেপির ডায়মন্ড হারবার টাউন সভাপতি সুরজিত্ হালদার সহ ২ জন। ‘আর নয় অন্যায়ের’ প্রচার উপলক্ষে বিজেপি কর্মীরা নতুন পোল এলাকায় দলীয় পতাকা লাগাছিলেন। সেই সময় তাঁদের ওপর হামলা করে তৃণমূল কর্মীরা। ঘটনায় আহতদের ডায়মন্ড হারবার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
- বিশেষ অজ্ঞের কোভিদ জিজ্ঞাসা পর্ব-১ >>
- বিশেষ অজ্ঞের কোভিদ জিজ্ঞাসা পর্ব-২ >>
- বিশেষ অজ্ঞের কোভিদ জিজ্ঞাসা পর্ব-৩ >>
- বিশেষ অজ্ঞের কোভিদ জিজ্ঞাসা পর্ব-৪ >>
- বিশেষ অজ্ঞের কোভিড জিজ্ঞাসা পর্ব-৫ >>
