রাহুল দেব , শিলচর,১৯অক্টোবরঃ আগ্রাসী মিজোরাম। একের পর এক অসমের জমি দখল করছে প্রতিবেশী রাজ্য মিজোরাম। আতঙ্কে সীমন্তবর্তী এলাকার মানুষ ঘর ছাড়া। তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে অসম-মিজোরাম সীমান্তে। পরিস্থিতি সরজমিনে খতিয়ে দেখতে দিসপুর থেকে ছুটে এসেছেন অসমের স্বরাষ্ট্র ও রাজনৈতিক বিভাগের কমিশনার সচিব জ্ঞানেন্দ্র দেব ত্রিপাঠি ও এডিজিপি (বর্ডার) মুকেশ আগরওয়াল।
অবস্থা এমনই, অসমের কাছাড় জেলার দুই রাজ্যের সীমান্তবর্তী অঞ্চল লায়লাপুরে রীতিমতো অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। সীমান্ত অঞ্চলের বাসিন্দাদের মারধর করে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।তছনছ করে দেওয়া হয়েছে আরও বেশ কিছু বাড়ি। জীবন্ত দগ্ধ হয়েছে বেশ কিছু গৃহপালিত পশুও।
এদিকে দুই রাজ্যের সীমান্ত বিবাদ নিষ্পত্তির জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল।জানাগেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে সোমবার দুই রাজ্যের মুখ্যসচিবদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা।
শুধু কাছাড় জেলায় নয়, অসমের করিমগঞ্জ জেলার অসম-মিজোরাম সীমান্তের চেরাগী ফরেস্ট রেঞ্জের সিংলা সংরক্ষিত বনাঞ্চলেও হয়েছে মিজো আগ্রাসন। আতঙ্ক সেই এলাকায়ও। পাশাপাশি এই জেলার মেদলিছড়ায়ও মিজোদের অবৈধ দখলদারিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে এলাকা।

করিমগঞ্জের জেলা শাসক অম্বামুথান এম পি এবং পুলিশ সুপার মায়াঙ্ক কুমারকে বার বার ছুটে যেতে হচ্ছে উত্তেজনাকর সীমান্ত এলাকায়। এমনকি করিমগঞ্জের জেলা শাসক ও পুলিশ সুপারকে মিজোদের দখলকরা অসমের ভূমিতেও যেতে বাধা দেয়। যেতে পারেনি করিমগঞ্জের বিজেপি প্রতিনিধিদল ও বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থও।
কাছাড় জেলার সীমান্তবর্তী হাওয়াইথাং এলাকার খুলিছড়ায় অসমের জমিতে অবৈধ ভাবে নির্মিত একটি গেট ভেঙে দেবার ফলে এই এলাকায় মিজোরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ।
অন্যদিকে, করিমগঞ্জ জেলার অসম-মিজোরাম সীমান্তে লকডাউনের সময় রাতাবাড়ি সংরক্ষিত বনাঞ্চলে অসমের কয়েক কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে অসমের জমি দখল করে নেয় মিজোরা। করিমগঞ্জ জেলা প্রশাসন এখানে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে মিজোদের তৈরি করা ঘর ভেঙে দেয়। ভেঙে ফেলা হয় মিজোরামের এম এনরেগা প্রকল্পের একটি তথ্য ফলকও।
এর জেরে উচ্ছেদ অভিযানের পরদিনই মিজোরাম আই আর ব্যাটেলিয়ন অসমের জমিতে ক্যাম্প বানিয়ে অবস্থান নেয়। এখনও অসমের ভূমি দখল করে রয়েছে মিজোরা। মিজোরাম আই আর ব্যাটেলিয়ন, ওয়াইএমএ এবং মিজো জিরোইপল-এর সদস্যদের সম্মিলিত আগ্রাসনে সীমান্তবর্তী এলাকার অসমের বাসিন্দারা ঘরবাড়ি ছেড়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন।
