
সবার দৃষ্টি দিল্লি-জয়পুর জাতীয় সড়কে
ইস্টার্ন টাইমস, নয়াদিল্লি : ক্রমবর্ধমান কৃষক বিদ্রোহের আবহে আবারও দেশের কৃষিজীবী মানুষদের আশ্বস্ত করতে আসরে নামলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কৃষকদের সাহায্য় করতে তাঁর সরকার বদ্ধপরিকর, শনিবার এমন বার্তাই দিয়েছেন মোদী।
শনিবার ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্সের ৯৩তম বার্ষিক সভায় তিনি আরও একবার নতুন কৃষি আইনের সুফল তুলে ধরার চেষ্টা করলেন।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, নয়া কৃষি আইনগুলো কৃষকদের নয়া বাজার দেবে এবং কৃষিক্ষেত্রে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও প্রযুক্তিতে সহায়তা করবে।
অন্যদিকে , তিন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে কৃষকদের আন্দোলনে সরকারের ভূমিকা নিয়ে ফের সুর চড়ালেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ‘কৃষি আইন বাতিল করতে আর কত ত্যাগ করতে হবে কৃষকদের’, এ প্রশ্ন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতির । উল্লেখ্য , নয়া কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে গত ১৭ দিনে ১১ জন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে বলে একটি সংবাদ প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।
- পথৰ পৰা আদালতো পালেগৈ কৃষকসকলৰ বিক্ষোভ>>
সেই রিপোর্ট উল্লেখ করে এদিন হিন্দিতে টুইটে ওই প্রশ্ন উত্থাপন করেন রাহুল।এর আগেও আন্দোলনরত কৃষকদের সমর্থনে সরব হতে দেখা গিয়েছে রাহুলকে।
সম্প্রতি কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে স্মারকলিপি পেশ করেন বিরোধীরা। রাহুলের নেতৃত্বেই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেন বিরোধীরা।
প্রধানমন্ত্রী এদিন কৃষকদের আশ্বস্ত করতে বলেছেন ,‘‘কৃষি পরিকাঠামো, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, ফসল সঞ্চয়, ইত্যাদি ভিন্ন ভিন্ন কৃষি নির্ভর বাণিজ্যক্ষেত্রগুলির মধ্যে অদৃশ্য দেওয়াল আছে।
নয়া আইনের ফলে সেই দেওয়াল সরে গিয়েছে। তাই নতুন কৃষি আইন কৃষকদের কাছে নতুন দিক উন্মোচন করবে। পৌঁছে দেবে নতুন প্রযুক্তি ও বাজার। দেশের কৃষকরাই এর থেকে সবচেয়ে লাভবান হবেন’’।
যদিও মোদীর কথায় কৃষকরা আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াবেন বলে মনে হয় না। কারণ, বিক্ষোভের ১৭ তম দিনে এসেও কৃষকরা তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে এখনও অনড়।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শনিবার দিল্লির চারদিকের রাস্তা আটকানো থেকে শুরু করে টোল প্লাজা বন্ধ করে দেওয়া, সবই শুরু করেছেন প্রতিবাদী কৃষকরা। শুক্রবারই কৃষকরা হুমকি দিয়েছিলেন, তাঁরা টোল প্লাজাগুলি বন্ধ করে দেবেন, টোল সংগ্রহ করতে দেবেন না। সেই মতো রাত থেকেই হরিয়ানার আম্বালায় শম্ভু টোল প্লাজা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এছাড়া বস্তারা টোল প্লাজাও বন্ধ করে দেওয়া হয় রাতেই।দিল্লি–জয়পুর সীমান্ত সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় শনিবার ভোর থেকেই রয়েছে পুলিশি পাহারা। গুরুগ্রাম ও ফরিদাবাদে সাড়ে তিন হাজার পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য।গুরুগ্রামের লাগোয়া শিল্পাঞ্চল মানেসরে দিল্লি-জয়পুর জাতীয় সড়কে নিশ্ছিদ্র পুলিশি ব্যবস্থা করেছে হরিয়ানা প্রশাসন।
শনিবার রাত বা রবিবার সকালে সেখানে পৌঁছানোর কথা কৃষক মিছিলের।অন্যদিকে বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এই আন্দোলনে এসে যোগ দিয়েছে কট্টরপন্থী বাম সংগঠন।
সেই সংগঠনগুলি আন্দোলনের অভিমুখ ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে কৃষক সংগঠনগুলি।কৃষক নেতা ডা . দর্শনপাল বলেছেন ,’আন্দোলনকে জনমানসে হেয় প্রতিপন্ন করা ,মূল ইস্যুগুলিকে ধামাচাপা দেওয়ার কৌশল বিজেপির ওই অভিযোগ। কিন্তু ওই কৌশল এবার কাজে দেবেনা’।
