
ইস্টার্ন টাইমস প্রতিনিধি , আগরতলা : ত্রিপুরায় চাকুরী খোয়ানো ১০৩২৩ শিক্ষকদের উপর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে সোমবার আগরতলায় বিক্ষোভ সভা করল ১০৩২৩ যৌথ সংগ্রাম কমিটি। ২৭ জানুয়ারী শীতের সকালে চাকুরীর স্হায়ী সমাধানের দাবিতে লাগাতর অবস্থানের ৫২ দিনের মাথায় অবস্থান মঞ্চে ঘুমিয়ে থাকা শিক্ষিকা ও তাদের সন্তানদের শরীর থেকে শীতের কম্বল কেড়ে নেওয়ার মত অমানবিক ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে সেদিন মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ঘেরাও করলে চাকুরীচ্যুত শিক্ষক – শিক্ষিকাদের উপর নির্বিচারে লাঠি, জল কামান, কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে পুলিশ।
চাকুরী না থাকলেও সমাজের কাছ থেকে শিক্ষক হিসাবে পরিচিতি পাওয়া শিক্ষকদের উপর অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। পুরুষ পুলিশদের হাতে মার খেয়েছেন মহিলা আন্দোলনকারী শিক্ষিকারা। জাতীয় পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে থাকা এক শিশুকেও পুলিশ মারধর করে সেদিন।
২০১৮ সালের বিধানসভা ভোটের আগে যেই শিক্ষকদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্হা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেই শিক্ষকরা ভোটের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরনের দাবি জানাতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে গেলে পুলিশ লেলিয়ে মেরে তাড়িয়ে দেয় ত্রিপুরার বিজেপি জোট সরকার।
সেদিন পুলিশের হাত থেকে চাকুরীচ্যুত শিক্ষকদের রক্ষা করতে নিজেদের বাড়িঘরের দরজা খুলে দিয়েছিলো আগরতলার মানুষ। পুলিশের বীভৎসতার বিরুদ্ধে গর্জে উঠে গোটা রাজ্যের মানুষ। ঘটনার সু- বিচার চেয়ে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছেন চাকুরীচ্যুত শিক্ষকদের সংগঠন ১০৩২৩ যৌথ সংগ্রাম কমিটি।
৩ ফেব্রুয়ারী থেকে চাকুরীর স্হায়ী সমাধানের দাবিতে ফের অবস্হানে বসার অনুমতি চেয়ে পুলিশের কাছে আবেদন জানালে সেই আবেদন খারিজ করে দেয় পুলিশ।
বাধ্য হয়ে অবস্হানে বসার অনুমতি চেয়ে ত্রিপুরা উচ্চ আদালতের দ্বারস্হ হয়েছেন চাকুরীচ্যুত শিক্ষক – শিক্ষিকারা। কেন অবস্থানে বসার অনুমতি দেয়নি পুলিশ? দুই সপ্তাহের মধ্যে বক্তব্য জানাতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। ১ মার্চ ফের এই মামলা উঠবে আদালতে। সোমবার বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেয় গোটা রাজ্যের প্রচুর ১০৩২৩ চাকুরীচ্যুত শিক্ষক – শিক্ষিকা।
২৭ জানুয়ারী পুলিশের নারকীয় রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানিয়ে বক্তব্য পেশ করেন১০৩২৩ যৌথ সংগ্রাম কমিটির নেতৃত্ব ডালিয়া দাস, কমল দেব, প্রনব দেব, অজয় দেববর্মা, অমূল্য দেববর্মা, গৌতম দেববর্মা প্রমুখ।
শহর আগরতলার পুরোনা জায়গায় অবস্থানে বসার আবেদনের মামলা বিচারাধীন হলেও রাজ্যের সর্বত্র আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নিচ্ছেন বলে জানান ১০৩২৩ যৌথ সংগ্রাম কমিটির নেতা কমল দেব।
