
ইস্টার্ন টাইমস , কলকাতা : ‘তৃণমূলের শেষের শুরু হয়ে গিয়েছে। এ বারে বাংলায় পদ্মফুল ফুটবেই।’ বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরের দিনই ডুমুরজলা স্টেডিয়াম থেকে হুঙ্কার দিলেন বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘এবারে আর ধমকে চমকে ভোট হবে না। মানুষ ১০০ শতাংশ নিরাপত্তার সঙ্গে ভোট দেবে। শুধু আর কেন্দ্রের সঙ্গে ঝগড়া নয়।
ঝগড়া করে কেন্দ্রের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে পারি না। এটা কার ব্যর্থতা? প্রশ্ন তোলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজীব এদিন বলেন, ‘কেন্দ্র ও রাজ্যে এক সরকার চাই। আমরা চাই ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকার। যা মানুষকে দিশা দেখাতে পারবে আগামী দিনে। বাংলার জন্য স্পেশান অর্থনৈতিক প্যাকেজ চাই। অমিতজিকে বলেছি। অমিতজি আমায় বলেছেন, বাংলার মানুষের মুক্তির জন্য দরকারে ক্যাম্প করে পড়ে থাকবেন।’
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, ‘রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা তলানিতে পৌঁছেছে। ওই দল না করলেই মিথ্যে মামলা দেওয়া হচ্ছে। সংখ্যালঘুদের শুধু ভোটের স্বার্থে ব্যবহার করা হয়েছে। কোনও উন্নয়ন হয়নি।’
রাজীব বলেন, ‘আমরাও জানি ভোট কীভাবে করতে হয়। সেইভাবেই ভোট হবে। একুশের নির্বাচনে বাংলায় পদ্মফুল ফুটবেই।’
প্রসঙ্গত, রবিবার বিজেপির এই সভায় উপস্থিত থাকার কথা ছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। কিন্তু শেষ মুহূর্তে শাহের বাংলা সফর বাতিল হয়ে যায়। তবে সশরীরে না থাকলে ভার্চুয়ালি সভায় বক্তব্য রাখেন অমিত শাহ।
এদিন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, ‘এতদিন সরকার মানুষের কাছে যায়নি, তাই ভোটের মুখে দুয়ারে দুয়ারে সরকার। এতদিন কোনও সমস্যার সমাধান করেনি, তাই ভোটের আগে পাড়ায় পাড়ায় সমাধান।
স্বাস্থ্যসাথী কার্ড সবটাই ভাঁওতাবাজি। প্রত্যেক পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে দেবে বলছে। যদি ১ কোটি পরিবারকেও দেয়, ৫ লক্ষ কোটি টাকা লাগবে। এই সরকারের বাজেট কত টাকার? সবটাই ভোটের গিমিক।’
তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র ভোটের জন্য গোটা রাজ্যটাকে বিক্রি করে দিচ্ছে। দয়া করে রাজ্যটাকে বিক্রি হতে দেবেন না। দয়া করে বাংলাকে বাঁচান। আমাদের সুযোগ দিন।’
আজকের সভা থেকে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় স্লোগান তোলেন, ‘চলুন পাল্টাই। চুপচাপ পদ্মফুলে ছাপ।’
রাজীব বলেন, ‘আমি মনে করি, কর্মীরাই দলের সম্পদ। আমি আজ নেতা হয়ে থাকলে, কর্মীরাই আমাকে নেতা বানিয়েছি।’
তৃণমূলের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘যত আমাদের উদ্দেশে অপশব্দ ব্যবহার করবেন, তত আমাদের জেদ-জোশ বাড়বে।’
শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, ‘৫০০ বছরের প্রাচীন শহর হাওড়া। যতজন আজ এই ঐতিহ্যশালী স্টেডিয়ামে এসেছেন, তার দ্বিগুণের বেশি রাস্তায় আছেন। গোটা রাস্তা জয় শ্রী রাম শুনতে শুনতে এসেছি। রাজীব আমার বন্ধুপ্রতিম। আমি ও রাজীব ২০০৪ সালে একসাথে লড়াই শুরু করেছিলাম। আমাদের মধ্যে আন্ডারস্ট্যান্ডিং ছিল। বাংলার উন্নয়নের স্বার্থে আমরা এক ছিলাম। ১৯ ডিসেম্বর শুভেন্দু এসেছে। এবার রাজীব এল। আজ বৃত্ত সম্পূর্ণ হল।’
তিনি বলেন, দিল্লিতে যে সরকার, কলকাতাতেও সেই সরকার করতে হবে। বেকারদের চাকরি দিতে হবে। বাংলায় পরিবর্তন আনতে হবে। আসল পরিবর্তন ১১-তে আসেনি। একুশেই আসল পরিবর্তন হবে। তৃণমূলকে মানুষ বিশ্বাস করে না। তৃণমূল এখন লিমিটেড কোম্পানি। সরকার এখন যমের দুয়ারে। এবার তৃণমূল ফাঁকা হয়ে যাবে।’
